Header Ads

তারেক রহমানের দেশে ফেরার সময় কবে?

         

তারেক রহমানের দেশে ফেরার সময় কবে?

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরতে পারেন—এমন আলোচনা এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ জোরালোভাবে চলছে। যদিও তারেক রহমানের নির্দিষ্ট ফিরে আসার তারিখ এখনও দলীয়ভাবে ঘোষণা করা হয়নি, বিএনপির নেতারা বলছেন, তিনি খুব শিগগিরই ফিরবেন এবং এ নিয়ে প্রস্তুতিও চলছে।

দলীয় সূত্র জানায়, তারেক রহমান আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ দেশে ফিরতে পারেন। তবে এটি এখনও চূড়ান্ত নয়। তাঁর আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তা, বাসভবন এবং রাজনৈতিক কার্যালয় সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা গণমাধ্যমে এলেও দৃশ্যমান তেমন কিছু এখনো দেখা যাচ্ছে না।

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মতে, তাঁরা তাঁকে গণ-অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রস্তুত। তবে তাঁর প্রত্যাবর্তনের সময় ঠিক করতে হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচনের সময়সূচি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিবেচনা করে। দল চায়, তাঁর ফেরা যেন রাজনৈতিকভাবে কার্যকর হয় এবং দলীয় অর্জনকে এগিয়ে নেয়।

জুলাই ও আগস্ট মাসে তাঁর ফেরা নিয়ে জোর আলোচনা রয়েছে, বিশেষ করে বিএনপির ৩৬ দিনের কর্মসূচি ও বড় সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনার কারণে। তবে বর্ষাকাল (আষাঢ়-শ্রাবণ) থাকায় অনেকে মনে করছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেই সময়ে বড় জনসমাগমে সমস্যা হতে পারে।

একজন বিশ্লেষক বলছেন, তারেক রহমানের ফেরা হতে পারে দুইভাবে—একটি রাজকীয়ভাবে, অর্থাৎ নির্বাচনে জয়ী হয়ে বা সরকার গঠনের পর; অন্যটি হতে পারে সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল হিসেবে।

আরও একটি আলোচনা হচ্ছে, তিনি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগে বা পরে দেশে ফিরবেন। এতে নির্বাচনের সময় বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হতে পারে।

এছাড়া লন্ডনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের পর একটি অভ্যন্তরীণ সমঝোতা অনুযায়ী ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনার কথাও এসেছে। তবে তাতে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হলে পরিস্থিতি বদলাতে তাৎক্ষণিকভাবে তারেক রহমানের দেশে ফেরা জরুরি হয়ে উঠতে পারে।

এদিকে জানা গেছে, তারেক রহমান গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে থাকতে পারেন, যেটি আগে ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকোর কাছে ভাড়া ছিল। বর্তমানে বাড়িটিতে রং ও সংস্কারকাজ চলছে।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ৭ মার্চ জরুরি সরকারের সময় তারেক রহমান গ্রেপ্তার হন। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান এবং সেখানেই রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। প্রায় ১৭ বছর তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। ২০১৮ সালে খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি প্রায় সব মামলায় অব্যাহতি পান। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, তাঁর দেশে ফেরায় সরকারের কোনো বাধা নেই।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি বলেন, ‘তারেক সাহেব নিশ্চয়ই দেশে ফিরবেন, অবশ্যই ফিরবেন। শিগগিরই ফিরবেন।’ একই কথা বলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিও। তিনি জানান, শুধু দল নয়, জাতীয় পর্যায়েও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের মুখে একসময় ঘন ঘন উচ্চারিত হতো: ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’। এখন সেই প্রত্যাবর্তন কতটা রাজকীয় হয় বা কতটা কৌশলগত তা নির্ভর করছে সময় ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।

No comments

Powered by Blogger.