Header Ads

রাশিয়ার পর আফগানিস্তানকে আর কোন কোন দেশ স্বীকৃতি দিতে পারে?

 
 
                    

রাশিয়ার পর আফগানিস্তানকে আর কোন কোন দেশ স্বীকৃতি দিতে পারে?



রাশিয়া তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—এরপর কারা তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে পারে? যদিও প্রতিটি দেশ স্বতন্ত্রভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়েকটি দেশ এখন এমনভাবে তালেবানের সঙ্গে কাজ করছে, যা প্রায় স্বীকৃতির পর্যায়ে পড়ে।

১. চীন

চীন বহু আগে থেকেই তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে রেখেছে।

  • ২০১৯ সালেই শান্তি আলোচনায় তালেবান নেতাদের আমন্ত্রণ জানায় বেইজিং।

  • ২০২৩ সালে চীনের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি আফগানিস্তানে বড় বিনিয়োগ করে।

  • ২০২৪ সালে তালেবানের এক নেতাকে কূটনৈতিক দূত হিসেবে স্বীকৃতি দেয় চীন, যদিও সরকারকে এখনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।

চীন তাদের সীমান্ত নিরাপত্তা ও বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI) বিস্তারের স্বার্থে তালেবানকে স্বীকৃতি দেওয়ার সম্ভাব্য প্রার্থী বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

২. মধ্য এশিয়ার দেশগুলো (যেমন তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান)

আফগানিস্তানের প্রতিবেশী এই দেশগুলো তালেবান সরকারকে এখনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি, তবে সীমান্ত নিরাপত্তা, পানির ব্যবহার, ও বাণিজ্যিক স্বার্থে তারা তালেবানের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছে।
বিশেষ করে রাশিয়ার প্রভাব থাকা এসব দেশের ওপর মস্কোর সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলতে পারে।

৩. ইরান

ইরান অতীতে তালেবানবিরোধী অবস্থানে থাকলেও, আইএস-খোরাসানের উত্থানের পর তালেবানের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই পরিবর্তিত হয়েছে।

  • ২০২৪ সালের মে মাসে তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেহরান সফর করেন এবং ইরানি প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
    ইরান কৌশলগত কারণে তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরালো করতে পারে, যা ভবিষ্যতে স্বীকৃতির দিকেও এগোতে পারে।

৪. সৌদি আরব ও উপসাগরীয় কিছু দেশ

সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত অতীতে আফগানিস্তানে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে ভূমিকা রেখেছে।

  • তালেবানের প্রথম শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) কেবল তিনটি দেশ (পাকিস্তান, সৌদি আরব, আরব আমিরাত) তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।

  • বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা সরাসরি স্বীকৃতি না দিলেও মধ্যস্থতা ও ত্রাণ কার্যক্রমে সক্রিয় রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার স্বীকৃতির পর এই দেশগুলোর ওপরও চাপ তৈরি হতে পারে।

৫. পাকিস্তান

যদিও পাকিস্তান একসময় তালেবানের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল, বর্তমানে তাদের সম্পর্ক জটিল।

  • টিটিপি ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে।

  • পাকিস্তান আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠাচ্ছে এবং সীমান্তে সশস্ত্র সংঘর্ষ হচ্ছে।

তবে, পাকিস্তানও কিছু ক্ষেত্রে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। ভবিষ্যতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী তারা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে পারে।

৬. তুরস্ক

তুরস্কও তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। ইসলামিক বিশ্বের একজন প্রভাবশালী দেশ হিসেবে তারা নিজেদের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা রাখতে চায়। তবে তারা এখনো স্বীকৃতির দিকে এগোয়নি।

No comments

Powered by Blogger.