৩৪ দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা তুঙ্গে। অফিস-আদালত, শহর-গ্রাম, হোটেল-দোকান—সব জায়গায় চলছে একই প্রশ্ন: "নির্বাচন কবে?"
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলছেন, “ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।” তবে অনেক রাজনৈতিক দল এতে আশ্বস্ত নয়।
বর্তমানে ৫৫টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ৫টির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও স্থগিত রয়েছে। ফলে কার্যত ৪৯টি দল আছে। এর মধ্যে অন্তত ৩৪টি দল চায় এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ভোট হোক।
তিনটি দল চায়, সংস্কার ও বিচার শেষেই নির্বাচন হোক। কয়েকটি দল গণহত্যার বিচার শেষ করেই ভোটের দাবি জানাচ্ছে। কিছু দলের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি, কিছু দল আবার প্রকাশ্যে কিছু বলতে চায়নি।
বিএনপি: ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই
বিএনপি শুরু থেকেই বলছে, ডিসেম্বরে ভোট চাই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের প্রস্তুতির আহ্বানও জানিয়েছেন। বিএনপির দাবি, সরকার নির্বাচন পেছাতে চায়। নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে তারা অসন্তুষ্ট।
জামায়াতে ইসলামী: সংস্কার ও বিচার শেষে নির্বাচন
জামায়াত শুরুতে সংস্কার ও আওয়ামী লীগের বিচার শেষে নির্বাচনের দাবি তুলেছিল। তবে এখন বলছে, রোজার আগেই (ফেব্রুয়ারির মধ্যে) ভোট হওয়া ভালো। তাদের মতে, ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিল—যেটাই সুবিধাজনক, তখন নির্বাচন দেওয়া হোক।
ইসলামী ঐক্যজোট: নির্বাচন নিয়ে আস্থা নেই
মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, “নির্বাচন হবে কি না, সেটা নিয়েই সন্দেহ আছে। তবে চাই, দ্রুত ভোট হয়ে সরকার গঠিত হোক।”
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ: বিচার ও সংস্কারের পরই নির্বাচন
তারা বলছে, বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান হলে তবেই ভোট। তবে জুনের আগেই নির্বাচন হলে ভালো।
বিজেপি: ডিসেম্বরে ভোট ছাড়া উপায় নেই
দলের চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলছেন, প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরে ভোটের কথা বলেছিলেন, এখন সেটা বজায় রাখা জরুরি।
অন্যান্য দলগুলোর মতামত:
-
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন: ডিসেম্বরেই ভোট চাই।
-
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ: দ্রুত সংস্কার করে ভোট দিতে হবে।
-
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম: আলোচনার মাধ্যমে সময় নির্ধারণ করা উচিত।
-
গণফোরাম: ডিসেম্বরে ভোট দিতে হবে, সরকার রোডম্যাপ দিক।
-
এনপিপি: ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত।
-
বাংলাদেশ ন্যাপ: সময়মতো ভোট চাই, রোডম্যাপ না থাকায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
-
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল): ডিসেম্বরের আগেই ভোট দেওয়া সম্ভব।
-
জাকের পার্টি: পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আছে, নির্দিষ্ট সময় বলেনি।
-
বাসদ: যত দ্রুত সম্ভব ভোট চাই।
-
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ: সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সময় ঠিক করা হোক।
-
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি: ডিসেম্বরের আগে-পরে, যেকোনো সময় ভোট হোক, কিন্তু ভোট হোক।
-
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট: ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট চাই, দেড় বছর প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময়।
-
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি: সরকার সময় নিয়ে অন্য উদ্দেশ্য পূরণের চেষ্টা করছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
-
খেলাফত মজলিস: নির্দিষ্ট সময় দিতে হবে, জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারিতে ভোট ভালো হবে।
-
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট: ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাই।
-
বিএনএফ: ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন চাই।
-
বাংলাদেশ কংগ্রেস: প্রথমে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার দরকার, তারপর ভোট।
-
ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ: নির্বাচন হওয়া জরুরি, সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
No comments