Header Ads

জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি: আন্দোলন দমনে জড়ালে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাদ


জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি: আন্দোলন দমনে জড়ালে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাদ




বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আন্দোলন দমনে জড়িত না হওয়ার জন্য সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ, বলেছেন মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনার ফলকার টুর্ক।

বৃহস্পতিবার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সেনাবাহিনীকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছিল যে, যদি তারা দমন-পীড়নে যুক্ত হয়, তবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম থেকে তাদের বাদ দেওয়া হবে।

সরকার পতন আন্দোলন ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠলে, ১৯ জুলাই শেখ হাসিনার সরকার কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তখনও চালিয়ে যাচ্ছিল, যা ধীরে ধীরে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এবং সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়।

৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করলে, প্রথমে সেনাবাহিনী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরে তারা আন্দোলনকারীদের ঢাকায় প্রবেশের অনুমতি দেয়। বিকেলে সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

জাতিসংঘের প্রতিবাদ ও তদন্ত

আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনী জাতিসংঘ লোগো সম্বলিত এপিসি ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করলে জাতিসংঘ প্রতিবাদ জানায়। সরকার পতনের পর দেশজুড়ে পুলিশের বিরুদ্ধে হামলা শুরু হয়, থানা ও স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়, অস্ত্র লুট করা হয়। বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে না ফেরায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।

পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। তারা সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত রাখে এবং সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়।

মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সম্ভাব্য বিচার

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুসন্ধানী দল ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্টের মধ্যে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকার আন্দোলন দমন করতে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল, যার ফলে ১,৪০০ মানুষ নিহত হয়। জাতিসংঘের মতে, এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল হতে পারে এবং আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার হতে পারে।

ফলকার টুর্ক বলেন, "আমরা বাংলাদেশে আলো ফেলতে পেরেছি, যা পরিবর্তন এনেছে।" তিনি জানান, জাতিসংঘের পদক্ষেপ সরকার পরিবর্তনে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে এবং মানবাধিকারের গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছে।

No comments

Powered by Blogger.