Header Ads

যুক্তরাষ্ট্রে ফের ভয়াবহ দাবানল

 

                           

যুক্তরাষ্ট্রে ফের ভয়াবহ দাবানল




যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এতে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের নর্থ রিমে অবস্থিত ৯৬ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন লজ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। দাবানলে আরও অন্তত ৫০ থেকে ৮০টি অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস (NPS)।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের নর্থ রিম পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শত শত পর্যটক ও বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে।

সিবিএস নিউজ জানায়, দুটি পৃথক দাবানল—‘ড্রাগন ব্রাভো ফায়ার’ এবং ‘হোয়াইট সেজ ফায়ার’—বর্তমানে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের নর্থ রিম ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ড্রাগন ব্রাভো ফায়ার সরাসরি গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন লজ এবং আশপাশের কাঠামোগুলোকে ধ্বংস করেছে।

জানা গেছে, ৪ জুলাই বজ্রপাতের মাধ্যমে ড্রাগন ব্রাভো ফায়ারের সূত্রপাত ঘটে। এটি সপ্তাহখানেকের মধ্যেই প্রায় ৫০০ একর (প্রায় ২০০ হেক্টর) এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ঘণ্টায় প্রায় ৩২ কিলোমিটার বেগে ছড়াতে থাকে, আর মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়ার গতি ছিল ঘণ্টায় ৬৪ কিমি।

অন্যদিকে, হোয়াইট সেজ ফায়ার শুরু হয় ৯ জুলাই। ১৩ জুলাই পর্যন্ত এটি বিস্তৃত হয় প্রায় ৪০,১৮৬ একর এলাকায়। যদিও এই দাবানলগুলোতে এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি, তবে আগেই সব বাসিন্দা ও পর্যটককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন লজ ছিল একটি মৌসুমি হোটেল, যা প্রথম তৈরি হয় ১৯২৮ সালে। ১৯৩২ সালে রান্নাঘরের আগুনে লজটি প্রথমবার ধ্বংস হয়। পরে ১৯৩৭ সালে এটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। প্রতি বছর মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এটি খোলা থাকে। চলতি বছর ১৫ মে চালু হওয়া লজটি ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত চালু থাকার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ দাবানলে এর মূল ভবন এবং আশপাশের প্রায় ১২০টি কেবিন আগুনে পুড়ে গেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হোয়াইট সেজ ফায়ার নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৫০০ দমকলকর্মী কাজ করছেন। আগুন দমনে আকাশপথে রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে। একইভাবে ড্রাগন ব্রাভো ফায়ার নিয়ন্ত্রণেও জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। তবে দাবানল নেভাতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রচণ্ড গরম, শুষ্ক আবহাওয়া ও তীব্র ঝোড়ো বাতাস।

উল্লেখ্য, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীর অন্যতম বিস্ময়কর প্রাকৃতিক স্থান। এটি কোলোরাডো নদীর দ্বারা গঠিত এবং প্রায় ৪৪৬ কিমি দীর্ঘ, ২৯ কিমি প্রস্থ এবং ১.৬ কিমি গভীর। এখানকার ভূতাত্ত্বিক গঠনে প্রায় ২ বিলিয়ন বছরের ইতিহাস দৃশ্যমান।

এটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান (World Heritage Site) হিসেবে স্বীকৃত এবং প্রতিবছর কোটি কোটি পর্যটক গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ভ্রমণে আসেন।

No comments

Powered by Blogger.