Header Ads

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট: ফখরুল

                

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট: ফখরুল



                         


 বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বিএনপি একটি কার্যকর ও সম্মানজনক সম্পর্ক চায়। তবে এর জন্য ভারতকেও দায়িত্বশীল প্রতিবেশীর ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, "আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি—যেভাবে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাই, ভারতের ক্ষেত্রেও তাই। আমরা চাই একটি কার্যকর সম্পর্ক। তবে তা তখনই সম্ভব, যদি ভারত ভালো প্রতিবেশীর মতো আচরণ করে। যেমন, বর্তমানে যিনি ভারতের আশ্রয়ে আছেন, তাকে ফিরিয়ে দেওয়া, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ না করা, পানিসমস্যা দ্রুত সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া এবং সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা—এসব বিষয়ে ভারতকে ইতিবাচক হতে হবে।"

ফখরুল বলেন, “সম্পর্ক উন্নয়নে ভারতকেই প্রথমে উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশকে ‘ছোট ভাই’ নয়, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে সমমর্যাদায় দেখতে হবে। সম্পর্ক হতে হবে সম্মানজনক এবং সমতা ভিত্তিক।”

তিনি আরও বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা রকম গুজব, মিথ্যা ও অর্ধসত্য ছড়াচ্ছে। এসব সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে রাজনীতিকরা এসব দেখে শুনে সিদ্ধান্ত নেবেন, আবেগে ভেসে যাওয়া উচিত নয়। আমাদের যা বিশ্বাস, পার্টির যে নীতি ও আদর্শ—সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করব।”

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংস্কার কমিশনের বৈঠকে ভিন্নমত থাকাই স্বাভাবিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সবাই এক হবে—এটাই গণতন্ত্র নয়। গণতন্ত্র মানে ভিন্ন মতের সহাবস্থান। তাই মতভেদকে অস্থিরতা হিসেবে দেখা উচিত নয়। আমি মনে করি, সবকিছুই সঠিক পথে চলছে।”

তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন যে, “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমস্যারও সমাধান হবে।”

ভারতের সঙ্গে বিএনপির ‘এলাইনমেন্ট’ (ঘনিষ্ঠতা) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটা বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য যে এখানে গণতন্ত্র চর্চা না থাকায় গুজব, গল্প আর আড্ডার জায়গা থেকে অনেক কিছুই তৈরি হয়। আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি—সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। ভারতের সঙ্গেও সেই ভিত্তিতেই সম্পর্ক গড়তে চাই।”

তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন, জিজ্ঞাসা ও আগ্রহ থাকার মূল কারণ—অতীতে ভারত বাংলাদেশের জনগণের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কাজ করেনি। বিগত সরকার, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও পানিসমস্যা, সীমান্ত হত্যা, হিস্যার বণ্টনসহ নানা সমস্যা সমাধান হয়নি। এমনকি নির্বাচন ও প্রশাসনে ভারতের হস্তক্ষেপ নিয়ে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। বর্তমানে ভারতের আশ্রয়ে থাকা একজন ফ্যাসিস্ট নেত্রীও সেই ক্ষোভ বাড়িয়ে তুলেছে।”

সবশেষে তিনি পুনরায় বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে একটি কার্যকর, সম্মানজনক সম্পর্ক চাই—যা সমতা ও পারস্পরিক মর্যাদার ভিত্তিতে গড়ে উঠবে। তবে ভারতকেই সম্পর্ক উন্নয়নে আন্তরিক উদ্যোগ নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.