Header Ads

আঙুল তোলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারাটা একবার দেখুন

        
                       

আঙুল তোলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারাটা একবার দেখুন




জামায়াতে ইসলামীর প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, “মিটফোর্ডের ঘটনার জন্য বিএনপিকে দোষারোপ করার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখুন। মহান মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের ভূমিকা আজও দেশবাসী ভুলে যায়নি।”

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতিসহ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরির প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে এতে হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন।

‘মিটফোর্ডের ভিডিও তুলে এনে বিএনপিকে টার্গেট’

মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপি নেতা সোহেল বলেন, “ঘটনাটি দেখে সবাই কেঁদেছে। আমরা ভেবেছিলাম, দলমত নির্বিশেষে সবাই প্রতিবাদ করবে। কিন্তু অবাক হয়েছি যখন দেখি, একটি মহল যতটা প্রতিবাদ করা উচিত ছিল, ততটা করেনি। বরং তারা বিএনপির দিকেই আঙুল তুলেছে। আমাদের তখন সন্দেহ হয়।”

তিনি বলেন, “আমরা তদন্ত শুরু করি। দেখতে পাই, ঘটনার দুদিন পর খুলনায় আমার এক ভাইকে রগ কেটে হত্যা করা হয়। ঠিক তখনই মিটফোর্ডের ভিডিওটি সামনে আনা হয়। উদ্দেশ্য ছিল খুলনার ঘটনাকে আড়াল করা। যতই খুঁজি, ততই দেখি এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং বিএনপির বিরুদ্ধে একটি সাজানো চক্রান্ত।”

জামায়াতের উদ্দেশে কঠোর ভাষা

সোহেল বলেন, “আপনারা বলছেন বিএনপি দোষী। অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদারদের সাথে মিলে আপনারাই মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি চিনিয়ে দিয়েছেন। আপনাদের জন্যই লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এমনকি মা-বোনদের পর্যন্ত হানাদার ক্যাম্পে তুলে দিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “নিজেদের স্ত্রী-মেয়েদেরও মনোরঞ্জনের জন্য ক্যাম্পে দিয়েছিলেন—এমন ইতিহাস আছে আপনাদের। এখন একটি ঘটনার দায় বিএনপির উপর চাপিয়ে দেন? আগে আয়নায় মুখ দেখুন।”

এনসিপি ও চরমোনাই পীরকে উদ্দেশ করে হুঁশিয়ারি

নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিকে উদ্দেশ করে সোহেল বলেন, “তোমাদের বয়স কম, তাই অনেক কিছু ওভারলুক করি। কিন্তু শহীদ জিয়াউর রহমানের ছবি ছেঁড়া আর তারেক রহমানকে নিয়ে বাজে কথা বলা সহ্য করব না। জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আমাদের জান। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে জাহান্নাম পর্যন্ত ধাওয়া করব।”

চরমোনাই পীরকে উদ্দেশ করে বলেন, “হুজুর, কলা খাইবা, গাছ লাগাইয়া খাও। অন্যের গাছের দিকে টিপে টিপে চাও কেন?”

ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি কড়া বার্তা

তিনি বলেন, “ষড়যন্ত্র কখনো টেকে না। যতই ষড়যন্ত্র করুন, সত্যের জয় হবেই। বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। পাহাড় ঠেলার চেষ্টা করবেন না। আন্দোলনের অগ্ন্যুৎপাত যে পাহাড় থেকে বের হয়, তার কাছ থেকে দূরে থাকাই ভালো।”

সোহেল আরও বলেন, “এই দেশ ভারতের দালালদেরও হবে না, পাকিস্তানের দালালদেরও না।”

বিক্ষোভ মিছিল

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন—বিএনপি নেতা মীর সরফত আলী সপু, সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।

পরে নয়াপল্টন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ মোড়, মৌচাক, মগবাজার, বাংলামোটর হয়ে শাহবাগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

একইদিন দেশের সব মহানগর ও জেলা শহরেও কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

No comments

Powered by Blogger.