সুখবর পাচ্ছেন সরকারি প্রাথমিকের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের বেতনস্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করার প্রক্রিয়া সক্রিয়ভাবে সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বিষয়টি নিশ্চিত করে শনিবার (৫ জুলাই) অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মোহাম্মদ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক পত্রে বিস্তারিত জানানো হয়।
পত্রে বলা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের আলোকে রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১১তম গ্রেড থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্তে অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে। বাকি প্রধান শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও দশম গ্রেড বাস্তবায়নের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, "সরকারের ইতিবাচক অবস্থান প্রশংসনীয়। এতে ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলো। তবে আমাদের দাবি ছিল—সব প্রধান শিক্ষককে এই সুবিধার আওতায় আনা ও সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেল ১১তম গ্রেডে বাস্তবায়ন।"
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা দেন। সে সময় প্রজ্ঞাপনও জারি হয়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম ও অপ্রশিক্ষিতদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়। এই বৈষম্যের প্রতিবাদে রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায়ে রিটকারীদের দশম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেয় এবং তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে বলে। রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদন ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি খারিজ হয়। এরপর রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায় বহাল রাখে।
এদিকে, প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডের বিষয়কে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু মহল আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর। পত্রে সবাইকে চাঁদাবাজদের সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেন না করার অনুরোধ জানানো হয় এবং চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, "চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ হিসেবে পত্র জারি করেছি। আমরা চাই না কোনো শিক্ষক প্রতারণার শিকার হোক।"
তিনি আরও জানান, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রস্তাব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ে গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তবে পুরো প্রক্রিয়ায় কিছু সময় লাগতে পারে।
No comments