প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে হতাশ নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আমরা হতাশ। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন (২০১৮-২০২৪)’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, জুলাই মাস বিভাজনের নয়, ঐক্যের প্রতীক। কিন্তু অনেক রাজনৈতিক দল, যারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে, তারা কিছুই মেনে নিতে চায় না। তাই বিভেদ সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য থেকে সবাই দূরে থাকা উচিত।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে দেয়া বক্তব্য দুঃখজনক। গণঅধিকার পরিষদ এই বিষয়ে আপস করবে না। কিছু মহল জাতীয় পার্টিকে ফেরানোর কথাও বলছে, কিন্তু আমরা স্পষ্ট জানাচ্ছি, জাতীয় পার্টি হলো আওয়ামী লীগের সহযোগী, ১৪ দল নিয়ে আমরা কোনো আপস করব না। এই বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক দল বা উপদেষ্টা কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা শুরু থেকেই জাতীয় সরকার গঠনের পক্ষে বলেছি। জাতীয় সরকার না হওয়ায় আজকের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন দল নিজেদের মতো করে কাজ করছে এবং কেউ কেউ মনে করছে তারা একাই ক্ষমতায় আসবে।
নুরুল হক নুর বলেন, বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের ‘ফিটনেস’ দেখে জাতীয় নির্বাচন করানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আবু সাঈদের বাবা একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তারা রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা পাননি। এই আক্ষেপের দায় সরকারের। ঐকমত্য কমিশনের অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে অনৈক্যের সুর শোনা যাচ্ছে। প্রয়োজনে গণভোট আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন না হলে দেশে কোনো গণঅভ্যুত্থান হতো না। কিন্তু এখন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নাম উচ্চারিত হচ্ছে না। যেন গণঅভ্যুত্থান আসমান থেকে নেমে এসেছে। আজকের দিনে আমি গ্রেফতার হতাম। এর আগে অনেক নেতাকর্মী হামলার শিকার হয়েছেন। মুক্তির দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে রক্ত দিয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা অনৈক্য বাড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সবার কৃতিত্ব স্বীকার করতে হবে এবং একতা বজায় রাখতে হবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির মধ্যে বিভাজন হলে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে। হাসিনা ফিরে এলে সকল বিপ্লবীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। তাই সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। একতা সম্ভব করতে হলে সহনশীলতা জরুরি। এক ব্যক্তির একতা চাওয়া যথেষ্ট নয়, সবার আন্তরিকতা থাকা প্রয়োজন। তখনই নতুন বাংলাদেশ গঠন সম্ভব হবে।
আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য মাহফুজুর রহমান খানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মুখপাত্র ফারুক হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, সহসভাপতি আরিফুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নীলা শেখ, হাবিবুর রহমান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীন, মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।
No comments