Header Ads

এনসিপি কি বিএনপির সঙ্গে জোটে যাবে না?

                        

এনসিপি কি বিএনপির সঙ্গে জোটে যাবে না?




নির্বাচনের আগে দেশের রাজনীতিতে বাড়ছে নতুন মেরুকরণ। নির্বাচন ঘিরে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যে আবারও আলোচনায় এসেছে বিএনপি-এনসিপি জোটের সম্ভাবনা। বিষয়টি সামনে আসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের পর। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এবার আর জোট নয়, তবে এনসিপির জন্য আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার দরজা খোলা। তার এই বক্তব্য ঘিরে রাজনীতিতে শুরু হয় নতুন আলোচনা ও গুঞ্জন।

তবে এনসিপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের বিএনপির সঙ্গে জোটে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, তারা এককভাবে রাজনীতি করতে চান এবং বিএনপির সঙ্গে ক্ষমতার ভাগাভাগির রাজনীতি তাদের উদ্দেশ্য নয়।

খুলনায় এক পথসভায় এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “তারা (বিএনপি) ভেবেছিল ২-৩টি আসন দেখিয়ে আমাদের কিনে নেবে। কিন্তু যারা বিপ্লবের শক্তি, তাদের কেনার সাধ্য বাংলাদেশের কোনো দলের নেই।” এই বক্তব্যকে বিএনপির নেতার দেওয়া ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যের জবাব বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এনসিপির এক শীর্ষ নেতা জানান, “বিএনপির এমন ঘোষণা কৌশল হতে পারে। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করছি না। কিছু আসনের জন্য জোটে গিয়ে আমাদের রাজনীতি ধ্বংস করার প্রশ্নই ওঠে না। জামায়াতের সঙ্গেও কোনো সম্ভাবনা নেই।”

দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ বলেন, “বিএনপি গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে হয়তো তাদের কর্মীদের সান্ত্বনা দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না। আমাদের আহ্বায়ক ইতোমধ্যে বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন দল গঠনে মনোযোগী। দেশের প্রতিটি জেলায় কমিটি গঠন শেষে কাউন্সিলরদের সঙ্গে বসেই নির্বাচনী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “নির্বাচনী জোট নিয়ে এখনই কোনো ভাবনা নেই। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি ছাড়া এসব নিয়ে আমরা কিছু ভাবছি না। তপশিল ঘোষণার পর এসব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।”

বিএনপির ‘দরজা খোলা’ বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, “বিষয়টি এখন এনসিপির ভাবনার বিষয়—বিএনপির সঙ্গে আদৌ আলোচনা করা হবে কি না। গত ১০ মাসে বিএনপির ভেতরের দ্বন্দ্ব, চাঁদাবাজি ও অপকর্ম নিয়ে যেভাবে সংবাদ এসেছে, তাতে এই দলটির সঙ্গে জোট করা রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত হয়ে দাঁড়াতে পারে।

তবে এনসিপির নেতৃত্বে একটি জোট গঠনের সম্ভাবনার কথা জানান যুগ্ম সদস্য সচিব মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান। তিনি বলেন, “আমরা আসন ভাগাভাগির রাজনীতি করব না। যারা সংস্কার ও বিচারের প্রশ্নে আমাদের সঙ্গে একমত, আমরা তাদের নিয়েই পথ চলব। এনসিপির নেতৃত্বে একটি আদর্শিক জোট হতে পারে।”

এর আগে এনসিপির একাধিক নেতা এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সক্ষমতার কথা জানিয়েছেন। দলটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, “৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হলেও আমরা প্রস্তুত।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত ৪০০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসনে এনসিপি জয়ী হবে এবং জাতীয় সরকার গঠন করবে।” ২২ জুন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন জমা দেওয়ার সময়ও তিনি এই বক্তব্য দেন।

সার্বিকভাবে বলা যায়, বিএনপির তরফে আলোচনার দরজা খোলা থাকলেও এনসিপি এখন পর্যন্ত একক রাজনীতির পথেই এগোচ্ছে। তারা জোট নয়, বরং নিজস্ব শক্তিতে নির্বাচনী লড়াই ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের কথা বলছে।

No comments

Powered by Blogger.