Header Ads

মুখ দিয়ে লিখে এসএসসিতে জিপিএ- ৫

                

মুখ দিয়ে লিখে এসএসসিতে জিপিএ- ৫




যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সাতনল খানপুর গ্রামের প্রভাষক হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগম দম্পতির একমাত্র মেয়ে লিতুন জিরা। জন্ম থেকেই তার হাত-পা নেই। তবে শারীরিক এই সীমাবদ্ধতা তাকে থামাতে পারেনি। মুখ ও কনুই দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সকল বিষয়ে এ প্লাস পেয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে লিতুন।

লিতুন জিরার এই অসাধারণ ফলাফলের খবর নিশ্চিত করেছেন তার বাবা হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, তার মেয়ে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে সমাজের অবহেলিত, গরিব ও দুঃখী মানুষের সেবা করতে চায়।

লিতুন স্বাভাবিক শিশুর মতো বেড়ে ওঠেনি। কিন্তু একাগ্রতা, অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও প্রতিকূলতাকে জয় করার দৃঢ় মনোবলই তাকে এগিয়ে নিয়েছে। এর আগেও সে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে বৃত্তি লাভ করে। পাশাপাশি গান, কবিতা আবৃত্তি, রচনা প্রতিযোগিতায় উপজেলা, জেলা এবং জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছে।

এসএসসিতে এই সাফল্যে গর্বিত তার বাবা-মা, শিক্ষক এবং এলাকাবাসী। সবার কাছেই এখন সে অনুপ্রেরণার প্রতীক। লিতুন ও তার পরিবার আগামীর পথচলার জন্য সকলের দোয়া চেয়েছেন।

জানা গেছে, লিতুন জিরা নেহালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ২০১৯ সালে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পর সে ওই বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় এবং নিয়মিত প্রতিটি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে এসেছে।

মেয়ের সফলতা নিয়ে তার মা মোছা. জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়েকে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া মেয়েকে নিয়ে সমাজের নানা কটূক্তি সহ্য করেছেন। অনেক রাত চোখের জলে কেটেছে ভবিষ্যতের চিন্তায়। কিন্তু মেয়ের মেধা ও অধ্যবসায় তাকে নতুন আশা দেখিয়েছে। আজ তিনি গর্বিত মা।

লিতুনের শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও লিতুন জিরার পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা, একাগ্রতা ও কঠোর পরিশ্রমই তাকে এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। সে আমাদের সকলের অনুপ্রেরণা।

No comments

Powered by Blogger.