গোপালগঞ্জ কি ভারতের অধিভুক্ত কোনো রাজ্য?
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তুলেছেন—“গোপালগঞ্জ কি ভারতের কোনো অঙ্গরাজ্য?” তিনি বলেন, যদি না হয়, তাহলে কেন শেখ হাসিনা ভারতে বসে হুকুম দিলে তা গোপালগঞ্জে পালন করা হবে? “এই জেলা কি বাংলাদেশের বাইরে?”—এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।
গত বুধবার গোপালগঞ্জে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এসব বলেন রিজভী। তিনি এ হামলার প্রতিবাদে “গণতন্ত্রের ফাইনাল খেলা হবে” বলেও ঘোষণা দেন।
শুক্রবার বিকেলে বরিশালে বিএনপির আয়োজনে ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে শোক র্যালিপূর্ব সমাবেশ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা রক্তের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তিনি দেশের বাইরে থেকেও মানুষ হত্যার নির্দেশ দিয়ে চলেছেন। ১৬ বছর ধরে দমন-পীড়ন চালিয়েও তিনি ক্ষান্ত হননি।”
রিজভী আরও বলেন, “পায়ে পাড়া দিয়ে এনসিপি যা করছে সেটাও সঠিক নয়। তবে সরকারপন্থী কোনো দল যদি গত ১৬ বছর ধরে লড়াইরত শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তাহলে জনগণ চুপ করে থাকবে না।”
তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছে—এই দেশে ফ্যাসিস্টদের ঠাঁই নেই। বেগম খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে শেখ হাসিনার বিপদ, আর দেশের মানুষের মুক্তি। তাই তাকে বন্দি করে রেখেছে সরকার। তারেক রহমানই আন্দোলনের মাঠ তৈরি করেছেন। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে শরিক হয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দিয়েছেন।”
রিজভী অভিযোগ করেন, “মানুষ হত্যা করেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি শেখ হাসিনা—পালিয়েছেন বিদেশে। তার নির্দেশেই গোপালগঞ্জে যুবলীগ-ছাত্রলীগ পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এককভাবে সম্ভব নয়। সম্মিলিত শক্তি দিয়ে তা অর্জন করতে হয়। বিএনপি ও তারেক রহমানকে নিয়ে সরকার অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসবের উদ্দেশ্য ভালো নয়।”
তিনি বলেন, “খুলনায় বিএনপি নেতার রগ কেটে দেওয়া হয়েছে। গোপালগঞ্জে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি পাশের দেশ থেকে দেশের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক ষড়যন্ত্র করছেন। এইসব গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি।”
সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, “গঠনমূলক সমালোচনা থাকলেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
সমাবেশ শুরু হওয়ার আগে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে যোগ দেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন—বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান, সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহিন, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের রহমতুল্লাহ, মেসবাহ উদ্দিন ফরহাদ, এবায়েদুল হক চাঁন ও মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিনসহ বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা।
সমাবেশ শেষে একটি শোক র্যালি নগরীর প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে নেতৃত্ব দেন রুহুল কবির রিজভীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
No comments