শান্তির নোবেল পুরস্কার কি এবার ট্রাম্পের হাতে উঠছে?

       

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার এবার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে উঠতে পারে কি না, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রে এক বৈঠকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পকে এই পুরস্কারের জন্য সুপারিশ করেছেন।

ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নেতানিয়াহু বলেন, “বিশ্বজুড়ে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের ভূমিকা ব্যতিক্রমধর্মী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।” তিনি মূলত ট্রাম্পের সময় সম্পাদিত আব্রাহাম চুক্তির কথা উল্লেখ করেন। এই চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মরক্কোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।

এছাড়া রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান বাডি কার্টারও ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন। সম্প্রতি ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পর কার্টার মন্তব্য করেন, “ট্রাম্প বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাস পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রকে ভয়ংকর অস্ত্র হাতে পাওয়া থেকে বিরত রেখেছেন।” তবে হামলার প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

ট্রাম্প নিজেও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগ্রহ গোপন করেননি। ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে তিনি লেখেন, “আমি যত কিছুই করি না কেন, তবুও আমাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হবে না।”

তিনি অতীতে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা হ্রাস, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে আলোচনার উদ্যোগ, এবং সার্বিয়া-কসোভোর মধ্যে অর্থনৈতিক চুক্তির মধ্যস্থতাসহ একাধিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।

২০২৪ সালে ইউক্রেনের সংসদ সদস্য ওলেক্সান্ডার মেরেজকো ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিলেও পরবর্তীতে তা প্রত্যাহার করে নেন। তাঁর মতে, ট্রাম্প এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। অন্যদিকে, পাকিস্তান ২০২৬ সালের শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে মনোনীত করেছে, ভারত-পাকিস্তান বিরোধ নিরসনে তাঁর ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে।

প্রতিবছর নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী নির্ধারণ করে। চলতি বছর মোট ৩৩৮টি মনোনয়ন জমা পড়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ২৪৪ জন ব্যক্তি ও ৯৪টি সংস্থা। ২০২৫ সালের শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা হবে আগামী ১০ অক্টোবর, আর পুরস্কার প্রদান করা হবে ১০ ডিসেম্বর।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এ পর্যন্ত চারজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন—থিওডোর রুজভেল্ট (১৯০৬), উড্রো উইলসন (১৯১৯), জিমি কার্টার (২০০২), এবং বারাক ওবামা (২০০৯)। ট্রাম্প যদি বিজয়ী হন, তবে তিনি হবেন পঞ্চম মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং সাম্প্রতিক দশকে প্রথম রিপাবলিকান, যিনি এই সম্মান অর্জন করবেন।