শেখ হাসিনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগেরও বিচার হওয়া প্রয়োজন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত।
বুধবার (৯ জুলাই) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন— আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এমন দলের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কী?
জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা সবসময় মনে করি, যে রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদের পক্ষে কাজ করে— আওয়ামী লীগ যেমন করেছে— তাদের প্রতিটি ব্যক্তির বিচার হওয়া দরকার। বিশেষ করে দলের প্রধান শেখ হাসিনার। তার বিচার ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আমরা আশা করি, এই হত্যাকাণ্ড, গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদী হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের বিচার হবে। দলীয়ভাবে যদি আওয়ামী লীগকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হয়, সেটিও আমরা সমর্থন করি।”
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল কদ্দুস এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিনকে রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে দেখতে যান মির্জা ফখরুল। সেখানে তিনি তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।
তিনি বলেন, “আপনারা ভালো করেই জানেন— এই আওয়ামী লীগের নির্যাতন, নিপীড়ন, গুম, খুনের সবচেয়ে বড় শিকার বিএনপি। আমি নিজেও ১১২টি মামলার আসামি, ১৩ বার কারাগারে যেতে হয়েছে।”
সংস্কার এবং নির্বাচনের প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো সাংঘর্ষিক সম্পর্ক নেই। যারা মনে করেন, নির্বাচন প্রয়োজন নেই, তারা পুনরায় ভাবুন— নির্বাচন জনগণের জন্য প্রয়োজন। একটি নির্বাচিত সরকার দরকার, যার সঙ্গে জনগণের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকবে। সংস্কারগুলো আমরাই প্রথম তুলেছি। সংস্কার ও নির্বাচন— উভয়ই একসাথে চলতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশকে রক্ষা করতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হলো— দেশকে সঠিক পথে ফেরানো। যত দ্রুত সম্ভব দেশকে সঠিক পথে আনা দরকার।”
পরে তিনি রাজধানীর আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রখ্যাত লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভিনকে দেখতে যান। বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তিনি ফরিদা পারভিনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল বলেন, “ফরিদা পারভিন উপমহাদেশের অন্যতম সংগীতশিল্পী, বিশেষ করে লালনসংগীতে তিনি অদ্বিতীয়। গোটা বাংলাদেশে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। বহু বছর ধরে সংগীত জগতে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন। বর্তমানে তিনি গুরুতর অসুস্থ, কিডনির জটিলতায় ভুগছেন। আমি সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, তার চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হোক এবং প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক। প্রধান উপদেষ্টা যেন ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়ে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করেন।”
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাঈদ সোহরাব, জাসাস সভাপতি হেলাল খান ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন।
No comments