কাশ্মীর ইস্যুতে যৌথ বিবৃতিতে সই করেনি ভারত
চীনে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) প্রতিরক্ষা বৈঠকে পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ বাদ পড়ায় যৌথ বিবৃতিতে সই করেনি ভারত। বিবিসির খবরে বলা হয়, বিবৃতিতে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে জঙ্গি তৎপরতার উল্লেখ থাকলেও ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামের হামলার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। ভারত এ অবস্থানকে পক্ষপাতদুষ্ট এবং পাকিস্তানপন্থি বলে মনে করছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (২৭ জুন) বলেন, ভারত চেয়েছিল যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের উদ্বেগ স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকুক। তবে একটি দেশ তাতে রাজি হয়নি। যদিও তিনি ওই দেশের নাম বলেননি, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পাকিস্তানই এ আপত্তি তোলে।
পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী হামলার পেছনে রয়েছে এবং পাকিস্তান এসব জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। তবে পাকিস্তান এসব অভিযোগ বরাবরের মতো অস্বীকার করেছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানও পাল্টা অভিযোগ করেছে যে ভারত বেলুচিস্তানে স্বাধীনতাপন্থি গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করছে, যা ভারত অস্বীকার করেছে।
বৈঠক শেষে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, যারা জঙ্গিদের আশ্রয় ও সহায়তা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিনি কারও নাম উল্লেখ না করলেও তার মন্তব্যে পাকিস্তানের প্রতি ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট।
রাজনাথ সিং আরও বলেন, ‘‘কিছু দেশ আছে যারা সন্ত্রাসবাদকে তাদের কৌশলের অংশ করে নিয়েছে। এটি কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এসসিও’র উচিত এ ধরনের দেশগুলোর নিন্দা জানানো।’’
উল্লেখ্য, কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান তিনটি যুদ্ধ করেছে। উভয় দেশই পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ দাবি করে, যদিও বাস্তবে তারা কাশ্মীরের আলাদা আলাদা অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পেহেলগামে হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
মে মাসে ভারত পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে পাকিস্তানও ভারতকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে এবং ড্রোন পাঠায়। ১০ মে পর্যন্ত চলা এ উত্তেজনা শেষ হয় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায়। যদিও ভারত পরে জানায়, এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সরাসরি ভূমিকা ছিল না।
No comments