মধ্যবয়সে ব্রণ কেন হয়? করণীয় ও চিকিৎসা কী
ব্রণ হলো একটি সাধারণ ত্বকের সমস্যা যা শুধু কিশোর-কিশোরীদের নয়, বরং অনেক সময় মধ্যবয়সীদেরও আক্রান্ত করে। বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, ব্রণ শুধু টিনএজ বা কৈশোরে দেখা যায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অনেকেই মধ্যবয়সেও এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও উদ্বেগ।
উত্তরা স্কিন কেয়ার অ্যান্ড লেজারের সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ডার্মাটোলজিস্ট ডা. যাকিয়া মাহফুজা যাকারিয়া ব্রণের কারণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা বিষয়ে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন।
ব্রণের প্রধান কারণ:
মধ্যবয়সে ব্রণের মূল কারণ হচ্ছে মানসিক উদ্বেগ ও চাপ। এটি কর্টিসল নামক একটি হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। কর্টিসলের মাত্রা বাড়লে সেবেশাস গ্রন্থির (তেল উৎপাদনকারী গ্রন্থি) কার্যকারিতা বেড়ে যায়। অতিরিক্ত তেল বেরিয়ে না এসে ত্বকের ভেতরে আটকে গেলে তা প্রদাহ সৃষ্টি করে, ফলে তৈরি হয় ব্রণ।
তৈলাক্ত ত্বক ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। যারা বয়ঃসন্ধিকালে ব্রণ সমস্যায় ভুগেছেন, মধ্যবয়সে এসে তারা আবার এই সমস্যায় পড়তে পারেন, বিশেষ করে যদি তারা তখন যথাযথ চিকিৎসা না নেন অথবা দীর্ঘদিন মানসিক চাপে থাকেন।
কীভাবে মানসিক চাপ ব্রণ বাড়ায়?
-
মানসিক চাপ কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়ায়।
-
কর্টিসল সেবেশাস গ্রন্থিকে অতিরিক্ত সক্রিয় করে তোলে।
-
অতিরিক্ত তেল গ্ল্যান্ডের ভেতর আটকে গিয়ে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
-
এতে মুখে বড় বড় ব্রণ হয়।
-
দীর্ঘমেয়াদি চাপ এই প্রক্রিয়াকে স্থায়ী করে তোলে।
করণীয়:
-
মানসিক চাপ কমানো – ব্রণ প্রতিরোধে মানসিক চাপমুক্ত থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
-
মেডিটেশন বা ধ্যান চর্চা – প্রতিদিন ধ্যান করলে মনের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ে ও মানসিক প্রশান্তি আসে।
-
ইতিবাচক চিন্তাভাবনা – মনকে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে।
-
সঙ্গীত থেরাপি – প্রশান্তিদায়ক সংগীত মনকে শান্ত করে। প্রতিদিন কিছু সময় এই চর্চা করলেই উপকার পাওয়া যায়।
-
ত্বকের যত্ন – নিয়মিত ফেসওয়াশ বা উপযুক্ত সাবান দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে।
চিকিৎসা:
-
ত্বকে উপযোগী ব্রণের ওষুধ ব্যবহার করা উচিত।
-
যদি ব্রণ গুরুতর অবস্থায় পৌঁছে যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হতে পারে।
-
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—যদি মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা না করা হয়, তাহলে ওষুধ প্রয়োগ করেও ব্রণ আবার ফিরে আসতে পারে।
No comments