মায়ের সঙ্গে ঈদ করলেন জয়, ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা
ভারতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। অনেকের কাছে এটি পারিবারিক একটি সুন্দর মুহূর্ত হলেও, আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীদের একাংশের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
নেতাকর্মীদের একাংশ বলছেন, সন্তানের মায়ের সঙ্গে ঈদ করা স্বাভাবিক। কিন্তু দেশের বাস্তবতা এখন কঠিন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী আজ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। কেউ কারাগারে, কেউ পলাতক। অনেক পরিবার চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
তাদের বক্তব্য, যদি জয় বলতেন—“আমার দলের নেতাকর্মীরা যখন পরিবার ছাড়া ঈদ করছে, আমি তখন কিভাবে উদযাপন করি?” তাহলে এমন এক বার্তা সবাইকে অনুপ্রাণিত করত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তিনি এমন কোনো বার্তা দেননি। বরং এই উদযাপনকে অনেকেই বাস্তবতার সঙ্গে এক ধরনের বিচ্ছিন্নতা হিসেবে দেখছেন।
আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগের ভেতরে আগে যেমন গঠনমূলক সমালোচনার সুযোগ ছিল না, এখনও সেই পরিবেশ তৈরি হয়নি। রাজনীতি যেন এক ধরনের দুষ্টচক্রে আটকে গেছে। সংকটে সবসময় সাধারণ কর্মীরাই সামনে থাকেন, শীর্ষ নেতারা নিরাপদে থাকেন। নেতাকর্মীদের ওপর পড়ে জেল, মামলা ও নির্যাতনের ভার। এটাই কি আমাদের কাম্য রাজনীতি?
আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করে জানান, সজীব ওয়াজেদ জয়ের দীর্ঘদিন মায়ের সঙ্গে দেখা হয়নি পাসপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতার কারণে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিল করা হয়, পরে বাধ্য হয়ে তিনি মার্কিন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। এবার সব জটিলতা কাটিয়ে তিনি ঈদে মায়ের সঙ্গে সময় কাটাতে ভারতে গেছেন।
দলের আরেক নেতা জানান, এই সফর একান্তই পারিবারিক। এর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। জয় শুধুমাত্র মায়ের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। দলীয় কোনো আলোচনায় তিনি অংশ নেননি, এমনকি ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের কোনো নেতার সঙ্গেও তার দেখা হয়নি। কলকাতা সফরেরও কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের চাপে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর এই প্রথমবার তিনি ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন।
এই ঈদ, একজন মায়ের জন্য আনন্দের হতে পারে। কিন্তু হাজারো নেতাকর্মীর জন্য তা থেকে গেছে এক গ্লানিময় উপলক্ষ, যেখান থেকে উঠে এসেছে অনেক প্রশ্ন ও হতাশা।
No comments