২৯তম বিসিএসে ২১ ভুয়া ক্যাডার নিয়োগ
বিসিএস পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস, প্রক্সি পরীক্ষার্থী, ভাইভায় প্রভাব খাটানো কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকরি—এসব অনিয়মের খবর নতুন নয়। তবে এবার প্রকাশ্যে এসেছে আরও গুরুতর অভিযোগ। ২৯তম বিসিএসে ক্যাডার না হয়েও ২১ জন চাকরি পেয়েছেন বিভিন্ন ক্যাডার পদে! এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জানা গেছে, ২৯তম বিসিএসের চূড়ান্ত নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার প্রায় ১৩ মাস পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি গেজেট প্রকাশ করে ওই ২১ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। তৎকালীন সিনিয়র সচিব আবদুস সোবহান সিকদার গেজেটটি প্রকাশ করেছিলেন।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আখতার হোসেন বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) গণমাধ্যমকে জানান, ২৯তম বিসিএস পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ না হয়েও ২১ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে তাদের শনাক্ত করেছে দুদক এবং তদন্ত শুরু করেছে সংস্থাটি।
তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা পাওয়া গেছে, যার কিছু নমুনা নিচে দেওয়া হলো:
প্রশাসন ক্যাডার:
-
সাজিয়া আফরীন (রেজি: ৪২০২৪২, মেধাক্রম: ১৯৪)
-
আসমাউল হুসনা লিজা (রেজি: ০১৯৩০২, মেধাক্রম: ১৯৫)
-
মোছা. নাসরীন পারভীন (রেজি: ০৭৪৩১৭, মেধাক্রম: ১৯৬)
-
সুলতানা রাজিয়া (রেজি: ০১৭৮৬৭, মেধাক্রম: ১৯৭)
-
মমতাজ বেগম (রেজি: ০৬০০১৪, মেধাক্রম: ১৯৮)
আনসার ক্যাডার:
-
শামীম আহমেদ (রেজি: ০৬৩২৬১, মেধাক্রম: ১৪)
শুল্ক ও আবগারি ক্যাডার:
-
অষ্পড়া বড়ুয়া (রেজি: ০৭৯৭৪৫, মেধাক্রম: ৭০)
-
ফরিদা ইয়াসমীন (রেজি: ০৩৭৪৩৮, মেধাক্রম: ৭১)
-
ফাহমিদা মাহজাবিন (রেজি: ০২৮৮২৬, মেধাক্রম: ৭২)
-
রোখসানা খাতুন (রেজি: ২১৮৪২৫, মেধাক্রম: ৭৩)
ইকোনমিক ক্যাডার:
-
মিফতা-উল-জান্নাহ (রেজি: ০৪১১৮৬, মেধাক্রম: ৪২)
-
ফারহানা রহমান (রেজি: ০৪১২৬১, মেধাক্রম: ৪৩)
পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার:
-
জামাল আল নাসের (রেজি: ০০০০৯৬, মেধাক্রম: ১১)
-
মো. কায়সার খসরু (রেজি: ৩১৩৬২২, মেধাক্রম: ১৩)
পররাষ্ট্র ক্যাডার:
-
সুভানা ইকরাম চৌধুরী (রেজি: ০২০৭৪৬, মেধাক্রম: ১৬)
পুলিশ ক্যাডার:
-
আছাদুজ্জামান (রেজি: ০২২০৭৬, মেধাক্রম: ৩৭)
-
মাহফুজা আক্তার শিমুল (রেজি: ০৪৫৬৭৬, মেধাক্রম: ৩৯)
কর ক্যাডার:
-
মো. শফিকুল ইসলাম (রেজি: ০৬০৯৬৭, মেধাক্রম: ২৯)
-
কামরুন নাহার শম্পা (রেজি: ০১৯১০৩, মেধাক্রম: ৩০)
-
মোসা. মাকসুদা ইসলাম (রেজি: ০৬০৩৫৬, মেধাক্রম: ৩২)
সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার:
-
এটিএম কামরুজ্জামান (রেজি: ১৩২৮২১, মেধাক্রম: ৬৮)
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইংয়ের উপসচিব মোহাম্মদ রফিকুল হক জানান, "এমন ঘটনা ঘটলে এবং তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে প্রথমেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হয়। পরে রাষ্ট্রীয় পাওনা আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।"
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশের নিয়োগ ব্যবস্থায় আবারও প্রশ্ন উঠেছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দুদক।
No comments