কোহলির আইপিএল জয় আর আনুশকার নীরব অবদান

 

মোরা কেঁদেছি একই দুঃখে, হেসেছি একই সুখে’—ওয়ারফেজ ব্যান্ডের এই জনপ্রিয় গানের লাইনটা হয়তো বিরাট কোহলি ও আনুশকা শর্মার জন্য লেখা হয়নি। তবু এই লাইন দুটো যেন তাঁদের জীবনের গল্পটাই বলে দেয়।

সুখে-দুঃখে একসাথে পথচলা—বছরের পর বছর ধরে এমনটাই করেছেন এই দুই তারকা। কোহলি যখন আইপিএলে ব্যর্থ হয়েছেন, বারবার কাছাকাছি গিয়েও শিরোপা ছুঁতে পারেননি, তখনও এক মুহূর্তের জন্যও পেছনে সরে দাঁড়াননি তাঁর স্ত্রী আনুশকা শর্মা। কোহলির হতাশা, ক্লান্তি, চাপ—সবকিছুতে পাশে থেকেছেন তিনি।

অবশেষে দীর্ঘ ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান। বেঙ্গালুরু দলটির জার্সিতে বহু বছর খেলার পর অবশেষে আইপিএলের কাঙ্ক্ষিত শিরোপা জিতলেন কোহলি। আর সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তে চোখ ছলছল করেই জড়িয়ে ধরলেন আনুশকাকে। সে আলিঙ্গনে ছিল গভীর কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসা। কারণ, এই সাফল্যের পেছনে আনুশকার অবদান কোনো অংশেই কম নয়।

শুধু কোহলির স্ত্রী হিসেবেই নয়, বেঙ্গালুরু শহরের মেয়ে হিসেবেও আনুশকার কাছে এই জয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সাল থেকে তিনি দলটিকে সমর্থন করে আসছেন। অবশেষে নিজের শহরের দলকে ট্রফি জিততে দেখে তাঁর চোখেও আনন্দের অশ্রু।

কোহলি নিজেই স্বীকার করেছেন আনুশকার অবদানের কথা। বলেছেন,

‘ক্লান্তিহীনভাবে আনুশকা খেলা দেখতে এসেছে। কঠিন ম্যাচগুলো দেখেছে, অল্পের জন্য আমাদের জেতা না পারাও দেখেছে। আমি যেন খেলে যেতে পারি, এ জন্য আমার জীবনসঙ্গী যে ত্যাগ, নিবেদন ও সমর্থন জুগিয়েছে, এসব আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।’

তিনি আরও বলেন,

‘যখন আপনি পেশাদার খেলোয়াড় হবেন, তখনই কেবল বুঝতে পারবেন পর্দার আড়ালে কত কিছু করতে হয়, কত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।’

১৮ বছর ধরে একই দলের হয়ে খেলে, তিন-তিনবার ফাইনালে গিয়ে হতাশ হওয়া, বারবার ভেঙে পড়া—এসবের মাঝেও কোহলি চেষ্টা থামাননি। হয়তো অনেকবার মনে হয়েছে, আর হয়তো হবে না। তবুও হাল ছাড়েননি। আর আজ তাঁর হাতে শিরোপা।

আনুশকার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে কোহলি বলেন,

‘আনুশকার সঙ্গে বেঙ্গালুরুরও বিশেষ সম্পর্ক আছে, এখানেই সে বড় হয়েছে। তাই এই জয় তার জন্যও খুব খুব বিশেষ কিছু।’

সব মিলিয়ে বলা যায়, মাঠের ভেতর কোহলির ব্যাট যেমন অবদান রেখেছে, মাঠের বাইরের নীরব সহযোদ্ধা হিসেবে আনুশকার ভালোবাসা, সমর্থন আর আত্মত্যাগও এই শিরোপা জয়ের পেছনে এক অদৃশ্য শক্তি হয়ে কাজ করেছে।