ভারত–কানাডা সম্পর্ক: নতুন সরকারের সঙ্গে উষ্ণতা ফেরার ইঙ্গিত
ভারত ও কানাডার মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে উষ্ণতার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি কানাডার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে। এ ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কানাডার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং তার সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
গত কয়েক বছরে খালিস্তান আন্দোলনের পেছনে কানাডার ভূমিকা নিয়ে ভারতের অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছিল। জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের সময়ে এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে তীব্র টানাপোড়েন দেখা দেয়। কূটনীতিক বহিষ্কারসহ নানা বিরূপ পদক্ষেপ নেয় উভয় পক্ষই।
তবে রাজনৈতিক পালাবদলের পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দুই দেশের মধ্যে সংলাপ ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে সম্পর্ক পুনর্গঠনের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়েছে।
ফোনালাপের পর জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ জানান, “কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তাকে নতুন দায়িত্বের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছি।”
অন্যদিকে অনিতা আনন্দও বলেছেন, “দুই দেশের অভিন্ন অগ্রাধিকার ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। যৌথভাবে কাজ করতে আমরা উন্মুখ।”
এই ইতিবাচক পরিবেশে সবচেয়ে বড় দৃষ্টিপাতের বিষয় হচ্ছে আসন্ন জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন, যা ১৫–১৭ জুন কানাডার আলবার্তায় অনুষ্ঠিত হবে। কানাডা এবার এই সম্মেলনের আয়োজক এবং ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়া ও ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
গত ছয়টি জি–৭ সম্মেলনে ভারতকে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এবারও যদি ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়, তা হলে মোদি ও কার্নির মধ্যে সরাসরি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সুযোগ তৈরি হবে। এতে করে সম্পর্কের বরফ গলার প্রক্রিয়া আরও জোরদার হতে পারে।
সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, উভয় দেশই অতীতের দ্বন্দ্ব পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে চাইছে। এখন দেখার বিষয়, এই সদিচ্ছার ভিত্তিতে বাস্তব পদক্ষেপ কতটা এগোয়।
No comments