ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশে আতঙ্কে খামারিরা
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কোরবানির পশুর হাটে জমে উঠেছে বেচাকেনা। তবে সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু ঢোকার শঙ্কায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন স্থানীয় খামারিরা।
তাদের দাবি, উপজেলায় স্থানীয়ভাবে গরুর চাহিদা মেটানোর মতো পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। তাই ভারতীয় গরু বাজারে ঢুকলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ অবস্থায় সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কসবায় ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় ২,৫০০ খামার রয়েছে, যেখানে প্রায় ১৫,০০০ গরু লালন-পালন করা হচ্ছে।
খামারিরা জানান, বছরের বেশিরভাগ সময়েই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় গরু কসবায় প্রবেশ করে। ঈদুল আজহার সময় এ প্রবেশ বাড়তে পারে বলেই তারা উদ্বিগ্ন।
বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামের খামারি আলী আহম্মদ বলেন, “গরুর খাবারের দাম অনেক। তবুও আমি প্রাকৃতিকভাবে খাওয়ায়ে ২০টি গরু পালন করেছি। যদি ভারতীয় গরু না আসে, তাহলে ভালো লাভ করতে পারব।”
মেহারী ইউনিয়নের চৌবেপুর গ্রামের খামারি মিজান মিয়া বলেন, “সারা বছর খরচ করে গরু পালন করেছি কোরবানির বাজারের জন্য। কিন্তু সীমান্ত দিয়ে নিয়মিত ভারতীয় গরু প্রবেশ করছে। এতে আমাদের গরুর চাহিদা ও দাম কমে যাচ্ছে। এভাবে চললে আমাদের টিকে থাকা কঠিন হবে।”
এ বিষয়ে কসবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তারেক মাহমুদ বলেন, “কসবায় প্রায় আড়াই হাজার খামারে ১৫ হাজারেরও বেশি গরু প্রস্তুত আছে। তবে সীমান্ত এলাকা হওয়ায় ভারতীয় গরু আসা নিয়ে খামারিদের দুশ্চিন্তা রয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকেও নির্দেশনা আছে, যাতে কোনোভাবেই অবৈধ গরু সীমান্ত পেরিয়ে না আসে। আমরা বিষয়টি নিয়ে সতর্ক রয়েছি।”
এদিকে, বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান জানান, “সীমান্ত এলাকায় বিজিবি নিয়মিত টহল দিচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে ভারত থেকে যেন অবৈধভাবে গরু বা অন্য কোনো পণ্য প্রবেশ না করে, সে জন্য আমাদের সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।”
খামারিরা আশাবাদী, যথাযথ নজরদারির মাধ্যমে ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশ ঠেকানো গেলে, এবার ঈদে তারা ভালো লাভ করতে পারবেন।
No comments