এসএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা নেওয়ার অভিযোগ: শিক্ষকদের আয় লাখ টাকা
২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১০ এপ্রিল। লিখিত পরীক্ষার পর চলছে ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা, যা শেষ হবে ২২ মে। এই পরীক্ষাগুলোকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার দুটি পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
টাকার বিনিময়ে নম্বর!
জানা গেছে, ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষায় ভালো নম্বর দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি জনে ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দিয়েছেন, আবার কেউ দিয়েছেন নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের। অভিযোগ রয়েছে, টাকা না দিলে নম্বর কম দেওয়া বা ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
আটোয়ারী উপজেলায় দুটি এসএসসি কেন্দ্র ছিল –
-
আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (পরীক্ষার্থী: ৬৯৫ জন)
-
আটোয়ারী সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (পরীক্ষার্থী: ৬৯১ জন)
মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১,৩৮৬ জন। হিসেব অনুযায়ী, যদি প্রত্যেক শিক্ষার্থী থেকে অন্তত ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়, তবে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭ লাখ টাকা।
ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ
-
বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানায়, সে শিক্ষক ইউনুস আলীকে ১,০০০ টাকা দিয়েছে ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য।
-
ভোকেশনাল বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, মনা স্যার ৮০০–১,০০০ টাকা নিয়েছেন, না দিলে ফেল করানোর ভয় দেখিয়েছেন।
-
মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এক পরীক্ষার্থী জানায়, শিক্ষক শাহীন ৭০০–৮০০ টাকা নিয়েছেন।
-
বার আউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক শরিফুল ইসলাম এবং আলোয়াখোয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাও একইভাবে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রধান শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য
আটোয়ারী সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরমিন পারভীন বলেন, "আমি বিষয়টি জানি না। কেউ টাকা নিয়ে থাকলে তার সঙ্গে আমি জড়িত নই। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুসও একই কথা বলেন, "আমার জানা নেই। অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লুৎফুল কবির মো. কামরুল হাসান বলেন, "সরকারি নিয়মে এভাবে টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments