Header Ads

মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের কোচ যেভাবে বদলে দিতে চান বাংলাদেশ দলকে

 

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স,  বাংলাদেশ ক্রিকেট দল


খেলোয়াড়ি জীবনটা হয়তো খুব জাঁকজমকপূর্ণ ছিল না জেমস প্যামেন্টের, কিন্তু কোচিং ক্যারিয়ারে তিনি অনেকটাই সমৃদ্ধ। সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি। এর আগে তিনি আইপিএলের সফল ফ্র্যাঞ্চাইজি মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে একই দায়িত্বে ছিলেন।

জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পেছনে তাঁর বড় একটি কারণ হলো—চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা। আরামদায়ক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ছেড়ে বছরের পর বছর জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করতে আসাটা তাই তাঁর সিদ্ধান্তের গভীরতাই বোঝায়। প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “খেলোয়াড়দের বুঝাতে চাই যে ওরা কতটা ভালো—এই কাজটাই আমার প্যাশন।”

বাংলাদেশ দলের সঙ্গে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন প্যামেন্ট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই তাঁর যাত্রা শুরু হয়। চুক্তিটা ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। দল ও খেলোয়াড়দের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।


প্যামেন্টের ফিল্ডিং ড্রিলগুলো বেশ পরিকল্পিত। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী ড্রিল ভাগ করে ক্রিকেটারদের শেখাচ্ছেন কীভাবে মাঠে প্রতিটি মুহূর্তে সচেতন থাকতে হয়। তাঁর লক্ষ্য শুধু টেকনিক শেখানো নয়, ক্রিকেটারদের কৌশলগত সচেতনতা বাড়ানো।

ক্যাচিং নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ—“সমস্যাটা আসলে মানসিক, টেকনিক্যাল নয়। খেলোয়াড়দের শেখাতে চাই কীভাবে দুইটা ডেলিভারির মাঝের সময়ে মানসিকভাবে স্থির থাকা যায় এবং পরবর্তী বলে পুরো মনোযোগ দেওয়া যায়।”


প্যামেন্টের আরেকটি বড় কাজ হলো ব্যাটসম্যানদের রানিং বিটুইন দ্য উইকেট উন্নত করা। মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে এ বিভাগে তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল। তিনি মনে করেন, রানিং শুধু দৌড় নয়—এটা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বোঝাপড়া, যোগাযোগ এবং প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার কৌশল।

তাঁর কথায়, “আপনাকে শারীরিকভাবে ভালো অ্যাথলেট হতে হবে। বুঝতে হবে কখন স্ট্রাইক রোটেট করবেন, কখন প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করবেন। জুটি গড়ার সচেতনতা এবং স্ট্রাইক রোটেশনে উন্নতি নিয়মিত বাউন্ডারি হাঁকাতেও সাহায্য করবে।”


প্যামেন্টের বিশ্বাস, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের চেয়ে জাতীয় দলে দীর্ঘমেয়াদি কাজের সুযোগ থাকায় পরিবর্তন আনা বেশি সম্ভব। খেলোয়াড়দের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করা, আস্থা অর্জন এবং ধারাবাহিক উন্নয়ন—সবই এখানে সহজতর।

তিনি চান, বাংলাদেশের ফিল্ডিং যেন বিশ্বমানের হয়। তাঁর ভাষায়, “আমি চাই বাংলাদেশ এমন একটা দল হবে, যাদের থাকবে দুর্দান্ত কল্পনাশক্তি, সৃজনশীলতা। এই দল ভর্তি থাকবে বিশ্বের সেরা অ্যাথলেট দিয়ে।”


জেমস প্যামেন্ট শুধু ফিল্ডিং উন্নত করতে চান না, তিনি বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে চান। মাঠে প্রতিটি মুহূর্তে কীভাবে সেরা হওয়া যায়, কীভাবে ছোট ছোট জিনিসে বড় প্রভাব ফেলা যায়—এসব শেখাতে চান তিনি। তাঁর হাত ধরেই যদি বাংলাদেশ দল সত্যিই সেরা অ্যাথলেটিক ইউনিট হয়ে ওঠে, তাহলে সেটা হবে এই সময়ের অন্যতম বড় অর্জন।

No comments

Powered by Blogger.