Header Ads

মনে হচ্ছিল ধর্ষণ করা হবে, তারপর হত্যা

 

মনে হচ্ছিল ধর্ষণ করা হবে, তারপর হত্যা

২০১৬ সালের অক্টোবরে প্যারিস ফ্যাশন উইকের সময় শহরের এক বিলাসবহুল হোটেলে ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন টিভি তারকা ও উদ্যোক্তা কিম কার্ডাশিয়ান। তাঁকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একদল ডাকাত প্রায় ১ কোটি ডলারের গয়নাগাটি লুট করে নেয়। নয় বছর পর, সেই ঘটনার বিচারকাজে অংশ নিতে প্যারিসের আদালতে হাজির হয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন কিম।

সাক্ষ্য দিতে গিয়ে কিম বলেন, “সেই রাতে আমার মনে হয়েছিল আমি বেঁচে ফিরব না। মনে হচ্ছিল, আমাকে ধর্ষণ করা হবে, এরপর হত্যা করা হবে।” আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

কিম জানান, ২ অক্টোবর রাতে তাঁর হোটেল কক্ষে পুলিশের পোশাকে দুজন মুখোশধারী ডাকাত ঢুকে পড়ে। তাঁকে জোর করে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিছানায় ফেলে তাঁর হাত-পা বাঁধা হয় এবং বন্দুক ঠেকিয়ে রাখা হয়। তিনি বলেন, “আমি তখন বুঝে গিয়েছিলাম, ওরা আমাকে গুলি করবে। শুধু প্রার্থনা করছিলাম যেন আমার বোন কোর্টনি আমাকে মৃত অবস্থায় না দেখে।”

ডাকাতরা তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং ১ কোটি ডলারের অলংকার ছিনিয়ে নেয়, যার মধ্যে ছিল তাঁর বাগদানের হীরার আংটিও। পোশাক খুলে যাওয়ার পর কিম আরও ভয় পেয়ে যান। বলেন, “আমি শঙ্কিত ছিলাম, ধর্ষণ করা হবে, তারপর হয়তো গুলি করে মেরে ফেলা হবে।”

আদালতের বিচারক যখন জানতে চান, তিনি কি মনে করেছিলেন তিনি মারা যাবেন, তখন কিম শান্ত গলায় বলেন, “আমি বিশ্বাস করেছিলাম, আমি মরে যাচ্ছি।”

আদালতে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন, ৭১ বছর বয়সী অ্যাওমার আইত খেদাচে কিমের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন। উত্তরে কিম বলেন, “আমি আপনাকে ক্ষমা করেছি। তবে এটাতে আমার ট্রমা দূর হয় না, বা আমার জীবন যেমন বদলে গেছে, তাও বদলায় না।”

তবে কিম বাকি অভিযুক্তদের নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। এমনকি তাঁর সাবেক ড্রাইভার গ্যারি মাদারকে নিয়েও কিছু বলেননি, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনিই ডাকাতদের কিমের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছিলেন।

তবে অপর অভিযুক্ত ইউনিস আব্বাসের প্রতি কিমের তীব্র ক্ষোভ ছিল। আব্বাস এই ঘটনাকে ঘিরে ‘I Held Up Kim Kardashian’ নামক একটি বই প্রকাশ করেছিলেন। কিম বলেন, “এই ব্যক্তি শুধু ঘটনার সঙ্গে জড়িত না, বরং এই ভয়ের স্মৃতিকে ব্যবহার করে টাকা কামাচ্ছে—এটা খুব কষ্টদায়ক।”

এই ঘটনার পর কিমের জীবন পুরোপুরি বদলে যায়। তিনি আদালতে বলেন, “আমি এখন রাতে একাধিক নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া ঘুমাতে পারি না। বাইরে বের হতে ভয় লাগে। মনে হয় কেউ বুঝে যাবে আমি বাড়িতে নেই, এবং আবার কিছু একটা ঘটবে।”

এই মামলার শুনানি এখনো চলছে। ২০১৬ সালের সেই ভয়ংকর রাত আজও কিমের মনে ভয় এবং দুঃখের ছাপ রেখে গেছে। তাঁর বক্তব্য ছিল শুধু একটি ঘটনার বর্ণনা নয়, বরং একজন ভুক্তভোগীর মানসিক যন্ত্রণার প্রকাশও।

No comments

Powered by Blogger.