Header Ads

কুমিল্লা বিভাগ বিএনপি: হাসনাত আবদুল্লাহকে বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম

 

কুমিল্লা বিএনপির আহ্বান: হাসনাত আবদুল্লাহকে বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম


জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ‘বিএনপির রাজনীতিও আওয়ামী লীগের টাকায় চলে’—এই মন্তব্যকে ‘মিথ্যা, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং রাজনৈতিকভাবে অপরিপক্ব’ বলে অভিহিত করে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপি। একইসঙ্গে এক সপ্তাহের মধ্যে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা না চাইলে কুমিল্লার রাজপথে তাঁর আর কোনো রাজনৈতিক অবস্থান থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটি।

সোমবার (১৯ মে) বিকেলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা বিভাগ ও জেলার বিএনপি নেতারা এই কঠোর অবস্থান তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম ভূঁইয়া।

কী বলেছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ?

গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,

“আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও তাঁদের অর্থদাতারা এখনো অক্ষত রয়েছেন। কুমিল্লার অনেক উপজেলায় বিএনপির রাজনীতিও আওয়ামী লীগের টাকায় চলে।”

তিনি আরও বলেন,

“সরকারের উচিত হবে আওয়ামী লীগের অর্থকাঠামো দ্রুত ধ্বংস করে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।”

এই বক্তব্যের জেরে কুমিল্লা বিএনপির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।

বিএনপির প্রতিক্রিয়া

সংবাদ সম্মেলনে সেলিম ভূঁইয়া বলেন,

“হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য শুধু মিথ্যাচার নয়, এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত এবং বিভ্রান্তিকর। এ ধরনের মন্তব্য কুমিল্লার ত্যাগী নেতা-কর্মীদের হৃদয়ে আঘাত করেছে। তাঁর এই উক্তি প্রমাণ করে তিনি রাজনৈতিকভাবে অপরিপক্ব এবং মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন।”

তিনি বলেন,

“একজন তথাকথিত রাজনৈতিক নেতা হয়ে এভাবে দায়িত্বহীন বক্তব্য দেওয়া হাস্যকর এবং নিন্দনীয়। হাসনাত আবদুল্লাহর উচিত হবে অবিলম্বে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্তভাবে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া।”

‘রাজপথে জায়গা থাকবে না’

বিএনপি নেতারা আরও বলেন,

“এই বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে কুমিল্লার রাজপথে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো কঠিন হবে। এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হলো। এর পর তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।”

অতীত আন্দোলনের স্মরণ

সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার বিএনপি নেতা-কর্মীদের ত্যাগ ও আন্দোলনের ইতিহাস স্মরণ করে বলা হয়,

“২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কুমিল্লার আন্দোলনে বিএনপির নেতাকর্মীরা জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন, তাঁরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেন। সেই আন্দোলন সরকারের পতনের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।”

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—

  • বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন-উর রশিদ (ইয়াছিন),

  • কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া,

  • কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের,

  • যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুজ্জামান আমীর,

  • সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ,

  • কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

সংগঠনের পক্ষ থেকে এককথায় বলা হয়েছে,

“বিএনপির রাজনীতি কখনোই কারও দান বা সহায়তায় চলে না—এটি মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের রাজনীতি।”

সুতরাং, হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য যদি রাজনৈতিক চতুরতার অংশ হয়, তবে কুমিল্লা বিএনপি তা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।

No comments

Powered by Blogger.