রমনায় বর্ষবরণ: উৎসবে মাতোয়ারা মানুষের ঢল

 

আজ ১৪ এপ্রিল। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ সালের প্রথম দিন। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে রাজধানীর রমনা পার্কে নেমেছে মানুষের ঢল। সকাল থেকেই আনন্দ-উৎসবে মুখরিত পুরো এলাকা।

সকাল সোয়া ৬টায় রমনার বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনে শুরু হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। আহির ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ছিল—‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’, যা আলো, প্রকৃতি ও মানবিক চেতনার মাধ্যমে সুন্দর আগামীর স্বপ্ন জাগিয়েছে।

এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ—ধর্ম, বর্ণ, ধনী-গরিব নির্বিশেষে। ফলে এটি পরিণত হয়েছে এক বর্ণিল মিলনমেলায়।

রমনার প্রতিটি পথ, প্রতিটি গেট এখন মানুষের ভিড়ে মুখর। শাহবাগ ও মৎস্য ভবনের সামনের গেটগুলো দিয়ে হাজার হাজার মানুষ পার্কে প্রবেশ করছেন। পুলিশ সদস্যরা আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করে সবাইকে পার্কে ঢুকতে দিচ্ছেন।

বৈশাখী সাজে সেজে এসেছেন নারী-পুরুষ, শিশুরাও। নারীদের পরনে লাল-সাদা শাড়ি, হাতে কাচের চুড়ি, গলায় মালা। অনেকের মাথায় বেলী ও রজনীগন্ধার গাজরা। পুরুষদের গায়ে বাহারি পাঞ্জাবি। পথ চলতে চলতেই কেউ কেউ সেলফি তুলছেন, কেউ ছাতার নিচে রোদ থেকে বাঁচছেন।

ছায়ানটের গান ও কবিতার মাধ্যমে নববর্ষের সকাল হয়ে উঠেছে আরও জীবন্ত। মানুষজন একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, নতুন বছরের আশায় বুক বাঁধছেন।

রমনার চারপাশে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয়েছে গোটা এলাকা। রয়েছে ডিএমপি ও র‍্যাবের কন্ট্রোল রুম। অনুষ্ঠানস্থলে যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্কভাবে দায়িত্ব পালন করছে।

তীব্র গরমে হাঁপিয়ে ওঠা মানুষদের জন্য পুলিশ সদস্যরা পানির ব্যবস্থাও করেছে।

এই মহোৎসবের সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি টিভি চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতার ও ইউটিউবের মাধ্যমে।

নতুন বছরকে ঘিরে রমনা পার্কে উৎসবের যে আবহ তৈরি হয়েছে, তা যেন প্রতিটি মানুষকে একসাথে বেঁধে দিয়েছে আনন্দ আর ঐক্যের বন্ধনে।