আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে তারা: ইউনূস

 

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে কি না, সে সিদ্ধান্ত দলটি নিজেই নেবে। তবে নির্বাচনে কারা অংশ নেবে, তা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত বিষয়।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি তাঁর সরকারি বাসভবনে নেওয়া হয় এবং তা আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ

মুহাম্মদ ইউনূস জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের দায়িত্ব নিতে বলা হলে তিনি বিস্মিত হন। তিনি আগে কখনো সরকার পরিচালনা করেননি, তাই নতুন দায়িত্ব গ্রহণ ছিল তাঁর জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। তবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা ছিল তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য।

নির্বাচন আয়োজন ও সংস্কার

মুহাম্মদ ইউনূস আশা প্রকাশ করেন যে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার দ্রুত করা গেলে ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার হলে সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে।

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

ভারতে নির্বাসিত শেখ হাসিনা এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অভিযোগ, বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য নিরাপদ নয়। তবে ইউনূস পাল্টা বক্তব্য দিয়ে বলেন, দেশে আদালত ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে, যেখানে যে কেউ অভিযোগ জানাতে পারে।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছরে ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এখন আমরা সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কাজ করছি।’ তবে ঢাকার বাসিন্দারা মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।

আন্তর্জাতিক সহায়তা ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য কমানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে তিনি স্বীকার করেন, মার্কিন সাহায্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

সর্বশেষ, মুহাম্মদ ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, তাঁর সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে জনগণ তাদের প্রতিনিধি সঠিকভাবে নির্বাচিত করতে পারে।