বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতিমালা: ডিভিডেন্ড বিতরণে কঠোর নিয়ম চালু
বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর ডিভিডেন্ড বিতরণের ক্ষেত্রে নতুন ও কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এই নিয়মের ফলে ব্যাংকগুলোর আর্থিক ভিত্তি, মুনাফা এবং শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ বিবেচনা করে ডিভিডেন্ড নির্ধারণ করা হবে।
ডিভিডেন্ড বিতরণের নতুন সীমাবদ্ধতা
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশের বেশি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে না। এতদিন ব্যাংকগুলো নগদ ও স্টক (বোনাস) ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছিল, তবে নতুন নিয়মের ফলে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার বিশ্লেষণ আরও কঠোরভাবে করা হবে।
ডিভিডেন্ড ঘোষণার গুরুত্বপূর্ণ শর্তসমূহ:
- মুনাফার উৎস: ব্যাংকগুলো শুধুমাত্র চলতি বছরের মুনাফা থেকে নগদ ডিভিডেন্ড দিতে পারবে, আগের বছরের সঞ্চিত মুনাফা থেকে নয়।
- খেলাপি ঋণের হার: যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০ শতাংশের বেশি, তারা কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারবে না।
- নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি: যেসব ব্যাংকের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে ঘাটতি রয়েছে, তারা ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে না।
- ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফার: ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে ১৫ শতাংশের কম মূলধন সংরক্ষণ করা ব্যাংকগুলো শুধুমাত্র সীমিত পরিমাণে ডিভিডেন্ড দিতে পারবে।
কঠোর নিয়মের কারণ
বাংলাদেশ ব্যাংক উল্লেখ করেছে, অতীতে লোকসানের মধ্যেও কিছু ব্যাংক উচ্চ হারে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছিল, যা তাদের আর্থিক ভিত্তিকে দুর্বল করেছে এবং অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হয়েছে। নতুন নীতিমালার লক্ষ্য ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল রাখা।
এছাড়া, ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধির জন্য ‘বিনিময়’ নামে একটি আন্তঃব্যাংক লেনদেন অ্যাপ চালু করা হয়েছে।
এই নীতিমালা ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া হিসাব বছরের জন্য প্রযোজ্য হবে এবং পরবর্তী বছরগুলোতেও এই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
No comments