অফিসের ৪টি নিয়ম যেগুলো বাতিল করার এখনই সময়

 বিশ্ববিখ্যাত অর্গানাইজেশনাল সাইকোলজিস্ট অ্যাডাম গ্রান্ট মনে করেন, আধুনিক কর্মক্ষেত্রে এমন কিছু নিয়ম এখনো টিকে আছে, যা কর্মীদের জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং উৎপাদনশীলতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এসব নিয়ম বাতিল করে আরও কার্যকর, স্বাস্থ্যকর ও সৃজনশীল কর্মপরিবেশ তৈরি করা দরকার। নিচে এমন ৪টি নিয়ম তুলে ধরা হলো, যেগুলো পরিবর্তনের এখনই সময়।

১. প্রতিদিন দীর্ঘ মিটিং

অনেক অফিসে প্রতিদিনই একাধিক মিটিং হয়, যা কর্মীদের সময় ও শক্তির অপচয় করে। বেশিরভাগ মিটিং প্রয়োজনের তুলনায় দীর্ঘ হয় এবং এর সামান্য অংশই বাস্তবে কাজে লাগে। দীর্ঘ মিটিংয়ের কারণে কর্মীরা বাকি কাজ শেষ করতে ওভারটাইম করতে বাধ্য হন, যা কর্মক্ষেত্রের চাপ বাড়ায় এবং হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অ্যাডাম গ্রান্টের মতে, সপ্তাহে মাত্র ১ দিন মিটিং রাখলে কর্মদক্ষতা বাড়তে পারে এবং কাজের চাপ কমানো সম্ভব।

২. সপ্তাহে ৫/৬ দিন অফিস

আগে অফিসের কাজের বেশিরভাগ অংশ শারীরিক পরিশ্রমের ওপর নির্ভরশীল ছিল, কিন্তু বর্তমানে সৃজনশীলতা ও প্রযুক্তিই মূল চালিকা শক্তি। তাই সপ্তাহে ৫-৬ দিন অফিসে কাজ করা অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয়। জাপান, বেলজিয়াম, নিউজিল্যান্ড, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে কর্মীরা ইতিমধ্যেই সপ্তাহে ৪ দিন অফিস করার ব্যবস্থা চালু করেছে। এমনকি অফিসে উপস্থিত না থেকেও অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করা সম্ভব, যা কর্মীদের জন্য আরও বেশি স্বাধীনতা ও সুবিধা নিয়ে এসেছে।

৩. বস–প্রথা

ঐতিহ্যগত বস-প্রথা কর্মীদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে। প্রতিটি কাজের জন্য অনুমতি নেওয়ার প্রক্রিয়া কর্মদক্ষতা কমিয়ে দেয় এবং নতুন উদ্ভাবনের সুযোগ সংকুচিত করে। আধুনিক কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের আরও স্বাধীনতা দেওয়া উচিত, যাতে তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং নতুন আইডিয়া প্রয়োগ করতে পারে।

৪. প্রচলিত চাকরির পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার

বহু প্রতিষ্ঠান এখনো চাকরির পরীক্ষায় এমন প্রশ্ন করে, যার সঙ্গে পদের প্রকৃত কাজের কোনো সম্পর্ক নেই। উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যাংক ক্যাশিয়ারের জন্য রাজধানীর নাম জানা জরুরি নয়, বরং তার আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত দক্ষতা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই চাকরির পরীক্ষার ধরন পরিবর্তন করে সরাসরি প্রাসঙ্গিক দক্ষতা যাচাই করা উচিত, যেমন—ব্যক্তির বাস্তবসম্মত সমস্যার সমাধান করার ক্ষমতা বা কাজের ক্ষেত্রে ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেওয়া।