নাগরিক সনদ পেতে বাড়ছে চরম ভোগান্তি

 

চট্টগ্রাম নগরীর নাগরিকরা এখন বিভিন্ন সনদ পেতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আগে যেসব সনদ দিনে দিনে মেলে, এখন তা পেতে মাস পেরিয়ে যাচ্ছে। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিক সনদসহ ১৭ ধরনের নাগরিক সেবা পেতে নগরবাসীকে প্রচুর সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

নাগরিক সনদ পেতে মাসের পর মাস অপেক্ষা

মোমিন রোডের বাসিন্দা কিরণ দাশের ঘটনা এর বড় উদাহরণ। তিনি বিধবা ভাতা পেতে সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে দ্বিতীয় বিবাহ না করার সনদ সংগ্রহ করেন। এক মাস আগে আবেদন করলেও এখনও সনদ পাননি, ফলে তাঁর ভাতা বন্ধ রয়েছে। একইভাবে, ৯ জানুয়ারি ওয়ারিশ সনদের জন্য আবেদন করা ওমর ফারুক কাজল এখনও সনদ পাননি। মোছাম্মৎ তাসনিয়ার ক্ষেত্রে তিন মাস লেগেছে সনদ পেতে।

জন্মনিবন্ধন পেতে দীর্ঘ অপেক্ষা

আগে দুই কার্যদিবসের মধ্যে জন্মনিবন্ধন পাওয়ার কথা থাকলেও এখন তা পেতে সপ্তাহ থেকে মাস লেগে যাচ্ছে। ২৯ জানুয়ারি জন্মনিবন্ধনের জন্য আবেদন করা মুহাম্মদ মিরাজ তিন সপ্তাহ পরেও সনদ পাননি। কাগজপত্রে সামান্য ঘাটতি থাকলেও আবেদনকারীদের দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

কেন দেরি হচ্ছে নাগরিক সেবা পেতে?

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলররা সনদে স্বাক্ষর করতেন, কিন্তু তাদের অপসারণের পর ১৩ জন কর্মকর্তা ৪১ ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করছেন। একজন কর্মকর্তা একাধিক ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকায় তাদের ওপর প্রচুর চাপ পড়ছে, ফলে সনদ পেতে বিলম্ব হচ্ছে।

এছাড়া, যাচাই-বাছাই ছাড়া নথিতে স্বাক্ষর না করায় দেরি আরও বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তারা বলছেন, সঠিকভাবে যাচাই না করলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে।

জন্মনিবন্ধন সংশোধনেও দীর্ঘ বিলম্ব

জন্মনিবন্ধন সংশোধনেও তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগছে। এনায়েত বাজার ওয়ার্ডের ইমতিয়াজ আলম তিন মাস অপেক্ষার পরও সংশোধিত জন্মনিবন্ধন পাননি। চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মো. নোমান হোসেন জানান, প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার আবেদন জমা হয়, যা দ্রুত অনুমোদন দেওয়া কঠিন।

কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, কর্মকর্তারা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন, ফলে সেবা দিতে সময় লাগছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ বিভিন্ন কাজের কারণে জন্মনিবন্ধনের আবেদন বেড়ে গেছে, তবে দ্রুত সেবা দিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।