বনানীতে ট্রাক দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু, সাত ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
রাজধানীর বনানীতে ট্রাকচাপায় এক নারী পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্রায় সাত ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এতে পুরো এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়, যার প্রভাব পড়ে আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কেও।
দুর্ঘটনার বিবরণ
সোমবার সকাল ৬টার দিকে বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় মিনারা আক্তার ও সুমাইয়া আক্তার নামের দুই পোশাক শ্রমিককে একটি ট্রাক চাপা দেয়। তাদের উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে মিনারা আক্তারকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও যানজট
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর আশপাশের তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসেন এবং সড়ক অবরোধ করেন। করাইল বস্তির লোকজনও বিক্ষোভে যোগ দিলে আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে। তারা বনানী, মহাখালী, গুলশান, এয়ারপোর্ট, প্রগতি সরণি, সাতরাস্তা এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে এবং অফিসগামীসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন।
পুলিশের পদক্ষেপ
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মফিজুল ইসলাম জানান, যানজট কমাতে কিছু গাড়িকে ক্যান্টনমেন্ট এবং রামপুরা-প্রগতি সরণি দিয়ে ডাইভারশন দেওয়া হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে।
বিক্ষোভরত শ্রমিকদের আশ্বস্ত করতে পুলিশ ও শ্রমিক নেতারা আলোচনায় বসেন। তারা নিহতের পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
বিআরটিএর সিদ্ধান্ত
নারী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় সম্পৃক্ত ট্রাকটির রেজিস্ট্রেশন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। ঢাকা মেট্রো-ন-১৪-০৭৬২ নম্বরের ওই ট্রাকের মালিকদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথিসহ হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ট্রাকটির রেজিস্ট্রেশন স্থায়ীভাবে বাতিল করা হবে এবং মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেষ কথা
এই ঘটনায় শ্রমিকদের ক্ষোভ যেমন স্পষ্ট, তেমনই শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থার উপরও এটি বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও, শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
No comments