ইয়েমেনে ভারতীয় নার্সের ফাঁসি হতে যাচ্ছে
ইয়েমেনে এক ব্যক্তিকে হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত ভারতীয় নারী নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড আগামী ১৬ জুলাই কার্যকর হতে যাচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেন।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ৩৭ বছর বয়সী নিমিশা প্রিয়া ভারতের কেরালার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে স্বামীর সঙ্গে ইয়েমেনে থাকতেন তিনি। ২০১৪ সালে তার স্বামী ও মেয়ে ভারত ফিরে যান। ২০১৬ সালে ভারত সরকার ইয়েমেন সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সে সময় ইয়েমেনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন প্রিয়া।
সেখানেই ইয়েমেনি নাগরিক তলাত আবদো মেহদির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তারা যৌথভাবে একটি ক্লিনিক চালুর সিদ্ধান্ত নেন, কারণ ইয়েমেনে বিদেশিদের ক্লিনিক পরিচালনার জন্য একজন স্থানীয় অংশীদার বাধ্যতামূলক। ২০১৫ সালে প্রিয়া মেহদির সহযোগিতায় ক্লিনিক চালু করেন। তবে সময়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।
প্রিয়ার অভিযোগ, মেহদি তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন এবং নিজেকে প্রিয়ার স্বামী হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বিভিন্নভাবে তাকে নির্যাতন করত মেহদি। প্রিয়া এই অভিযোগ ইয়েমেনি পুলিশেও জানায়। ২০১৬ সালে মেহদিকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান।
২০১৭ সালের ২৫ জুলাই প্রিয়া মেহদিকে ঘুমের ইনজেকশন দেন, যার ওভারডোজে তার মৃত্যু হয়। এরপর প্রিয়া এক বান্ধবীর সহযোগিতায় মেহদির মরদেহ টুকরো করে ক্লিনিকের পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়ে পালিয়ে যান। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৮ সালে নিমিশা প্রিয়াকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন, তবে তাতেও তিনি ব্যর্থ হন। এরপর দেশটির প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেন।
১৬ জুলাই সেই দণ্ড কার্যকরের কথা রয়েছে। এ নিয়ে ভারত সরকার এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। ইয়েমেন সরকারের সঙ্গে তারা আবারও যোগাযোগ করবে কি না, তাও স্পষ্ট নয়।
No comments