ওজন কমাতে চাইলে যে অভ্যাসগুলো বাদ দেওয়া জরুরি
বর্তমানে শরীরচর্চা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। কেউ ট্রেডমিলে দৌড়াচ্ছেন, কেউ আবার খাবারে ক্যালরির হিসাব করে খাচ্ছেন। তবে ওজন কমাতে শুধু ডায়েট বা ব্যায়াম করলেই হবে না। কিছু বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয় ঠিকভাবে না মানলে ওজন কমানো কঠিন হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবহেলা করলে ওজন কমার বদলে উল্টো বেড়ে যেতে পারে।
চলুন, জেনে নিই এমন কিছু কারণ—
১. বিপাকক্রিয়া বা মেটাবলিজম
সবার শরীরের বিপাকহার একরকম নয়। জিনগত কারণ ছাড়াও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেটাবলিজম ধীর হয়ে যায়। আবার অতিরিক্ত চর্বি, পেশির ঘাটতি বা খুব কম খাওয়ার অভ্যাসেও বিপাকক্রিয়া কমে যেতে পারে। তখন শরীর কম ক্যালরি খরচ করে এবং ওজন কমানো কঠিন হয়ে পড়ে।
২. ঘুমের ঘাটতি
ওজন কমাতে পর্যাপ্ত ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ। কম ঘুম হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যার ফলে ক্ষুধা বাড়ে এবং বিপাকক্রিয়া ধীর হয়। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
৩. রাতের খাবারের পরপর ঘুমানো
খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুয়ে পড়লে হজম প্রক্রিয়া ঠিকভাবে হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাতের খাবারের পর অন্তত ২-৩ ঘণ্টা সময় রেখে তারপর ঘুমানো উচিত। না হলে ওজন কমার বদলে বেড়ে যেতে পারে।
৪. শারীরিক কিছু সমস্যা
কিছু নির্দিষ্ট রোগ ওজন কমানোর পথে বাধা তৈরি করে। যেমন—থাইরয়েডের সমস্যা, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS), হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, স্লিপ অ্যাপনিয়া বা ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি। এসব রোগ থাকলে আগে চিকিৎসা নেয়া জরুরি, না হলে ডায়েট ও ব্যায়াম সঠিকভাবে কাজ করবে না।
৫. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কিছু ওষুধের কারণে শরীরে চর্বি জমে যায়। যেমন—জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ, মানসিক রোগের ওষুধ, খিঁচুনির ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ। এসব ওষুধ দীর্ঘদিন সেবনে ওজন বাড়তে পারে।
সুতরাং,
ওজন কমাতে চাইলে শুধু খাবার নিয়ন্ত্রণ বা ব্যায়াম করলেই হবে না। ঘুম, দৈনন্দিন অভ্যাস, ওষুধ, ও স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলোর দিকেও নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যক্তিগত উপযোগী ওজন কমানোর পরিকল্পনা করাই সবচেয়ে কার্যকর ও নিরাপদ উপায়।
No comments