কারফিউয়ের মধ্যে গোপালগঞ্জে এইচএসসি পরীক্ষা—হবে তো?
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে গোপালগঞ্জ শহরে কারফিউ জারি হওয়ায় বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিতের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। বুধবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার জানান, “বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি গোপালগঞ্জ শহরের পরীক্ষা কেন্দ্রটিকে কারফিউয়ের আওতার বাইরে রাখতে। তবে যদি পরবর্তীতে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা জানিয়ে দেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জের পরীক্ষার্থীরা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ভূগোল দ্বিতীয় পত্র এবং দুপুর ২টায় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, আরবি ও পালি প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, “গোপালগঞ্জ শহরে আমাদের একটি মাত্র কেন্দ্র রয়েছে। বৃহস্পতিবার যেসব বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে, সেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।”
উল্লেখ্য, এনসিপির কর্মসূচিকে ঘিরে মঙ্গলবার থেকেই গোপালগঞ্জে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হন।
বুধবার সকালে এনসিপি নেতারা গাড়িবহর নিয়ে শহরে প্রবেশের আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে সহিংসতা শুরু হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িতেও হামলা হয়।
দুপুর দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা জয়বাংলা স্লোগান দিতে দিতে শহরের পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ করে নেতারা পুলিশি নিরাপত্তায় টেকেরহাট হয়ে মাদারীপুরের পথে রওনা হন। কিন্তু দুপুর পৌনে ৩টার দিকে গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে লঞ্চঘাট এলাকায় ফের হামলা হয়।
এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের সংঘর্ষে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে সেখান থেকে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে তারা নিরাপদে স্থান ত্যাগ করেন।
দুপুরে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সন্ধ্যায় কারফিউ জারি করা হয়।
No comments