শরীরে কোলেস্টেরল বাড়ার লক্ষণ: জেনে নিন কীভাবে বুঝবেন
অনেক সময় শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লেও শুরুতে তা বোঝা যায় না। এই ‘নীরব ঘাতক’ ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষতি করতে থাকে। উচ্চ কোলেস্টেরল হৃদ্রোগ, স্ট্রোকসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। সাধারণত রক্তে ২০০ এমজি/ডেসিলিটারের বেশি কোলেস্টেরলকে উচ্চ কোলেস্টেরল ধরা হয়।
যদিও কোলেস্টেরলের মাত্রা জানার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় রক্ত পরীক্ষা, তবে শরীরে কিছু বাহ্যিক লক্ষণ থেকেও ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে। ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া–র এক প্রতিবেদনে এসব লক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে।
চলুন জেনে নিই কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার কিছু সাধারণ লক্ষণ:
১. চোখের পাতার চারপাশে হলুদাভ দাগ বা ফোলাভাব
চোখের আশপাশে ছোট ছোট হলুদ দাগ বা সামান্য ফোলাভাব দেখা দিলে তা কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে। এগুলো সাধারণত ব্যথাহীন হয় এবং রক্তে চর্বি জমে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে।
২. কর্নিয়ার চারপাশে ধূসর বা সাদা বৃত্ত
চোখের কর্নিয়ার চারপাশে যদি ধূসর বা সাদা রিং দেখা যায়, তবে এটি কর্নিয়াল আর্কাস নামে পরিচিত। এটি বয়স বৃদ্ধির ফলে স্বাভাবিকভাবে দেখা দিলেও যদি ৪৫ বছরের কম বয়সেই এমনটা দেখা যায়, তাহলে তা রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের ইঙ্গিত হতে পারে।
৩. ত্বকে হলুদ দানার মতো ফুঁসকুড়ি
চোখ, গাল, কনুই কিংবা হাঁটুর চারপাশে যদি হলুদাভ ছোট ছোট দানার মতো ফুঁসকুড়ি দেখা দেয়, তবে তা হতে পারে জ্যান্থোমা। এটি সাধারণত ব্যথাহীন হয় এবং শরীরে অতিরিক্ত লিপিড বা কোলেস্টেরল জমার কারণে দেখা দিতে পারে।
৪. ত্বকে হলুদ ছোপ বা রঙ পরিবর্তন
বিশেষ করে চোখের চারপাশে যদি হলুদ রঙের দাগ বা ছোপ দেখা যায়, তবে তা জ্যান্থোডার্মা হতে পারে। রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের কারণে ত্বকের নিচে চর্বি জমে গেলে এমন ছোপ দেখা দিতে পারে।
৫. ত্বকে নীলচে বা বেগুনি রঙের জাল
রক্তনালিতে কোলেস্টেরলের খণ্ড আটকে গেলে ত্বকে নীল বা বেগুনি জালের মতো দাগ দেখা যেতে পারে। এই উপসর্গকে কোলেস্টেরল এমবোলিজম বলা হয়। এটি রক্তপ্রবাহে বাধার ইঙ্গিত দেয় এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
৬. হঠাৎ ছোট ছোট গুটি বা দানার গুচ্ছ
মুখ, বাহু কিংবা নিতম্বে হঠাৎ করে যদি ছোট ছোট লাল বা হলুদ গুটির মতো গুচ্ছ দেখা যায়, তবে তা হতে পারে বিস্ফোরিত জ্যান্থোমা। এটি ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে হয়। এই লক্ষণকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
✔️ করণীয়
উপরে বর্ণিত উপসর্গগুলোর কোনোটি যদি আপনার শরীরে দেখা দেয়, তাহলে সময় নষ্ট না করে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নিন। পাশাপাশি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কোলেস্টেরল হৃদ্রোগ, স্ট্রোকসহ বহু জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
No comments