Header Ads

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুমোদন

      

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুমোদন


সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে অনুমোদন পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার গত ২৫ মে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ৩৭ ধারা পরবর্তী একটি নতুন ধারা যুক্ত করে একটি অধ্যাদেশ জারি করে। এতে বলা হয়েছিল—৭ দিনের নোটিশে চাকরিচ্যুতি, অফিস প্রধানের আদেশ অমান্য করলে অনানুগত্যের অভিযোগে চাকরিচ্যুতি, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি বা অন্যকে উসকানি দিলে চাকরিচ্যুতি, এমনকি কর্মে উপস্থিত না থাকলে বা কর্তব্য পালনে বাধা দিলে চাকরি থেকে অপসারণের বিধান রাখা হয়।

এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সচিবালয়ে শুরু হয় মাসব্যাপী আন্দোলন। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ব্যানারে এ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। নেতৃত্ব দেন মো: নূরুল ইসলাম, মো: বাদিউল কবীর এবং মো: নজরুল ইসলাম।

পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ৪ জুন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি আন্দোলনরত নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে অধ্যাদেশ সংশোধনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবও আলোচনায় অংশ নেন।

সর্বশেষ ২৬ জুন বিকাল ৪টায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সভায় সংশোধনী চূড়ান্ত হয়।

সংশোধনীতে যা থাকছে:

  • অনানুগত্য ও কর্মস্থলে অনুপস্থিতি প্ররোচনার ধারাগুলো বাতিল করা হয়েছে।

  • অভিযুক্ত কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে শুনানিতে অংশ নিতে চান কিনা, তা নোটিশে উল্লেখ করতে হবে।

  • নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য ৩ দিনের মধ্যে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন বাধ্যতামূলক। এতে একজন নারী সদস্য রাখতে হবে।

  • তদন্ত আদেশের ১৪ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে, ব্যর্থ হলে কমিটির সদস্যদের “অদক্ষ” হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং এসিআরে (বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন) তা লিপিবদ্ধ হবে।

  • প্রয়োজনে তদন্ত কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

  • কোনো কর্মচারীকে শাস্তি দেওয়া হলে তিনি ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করতে পারবেন।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব মো: নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল সামরিক শাসনামলের বিতর্কিত ও কালো আইন বাতিল করা। সরকার আমাদের আপত্তি ও আশঙ্কা গুরুত্ব দিয়ে অধ্যাদেশ সংশোধন করেছে—এটা ইতিবাচক দিক। সরকারি কর্মচারীদের জন্য ২০১৮ সালের শৃঙ্খলা ও আপীল বিধিমালা বহাল থাকায়, নতুন অধ্যাদেশের প্রয়োজন ছিল না। তারপরও সরকার যে বোধোদয় দেখিয়েছে, তাতে দেশের ১৮ লাখ কর্মচারীর পক্ষ থেকে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।”

No comments

Powered by Blogger.