৬০ এমপির আহ্বান: এখনই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিন
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির প্রায় ৬০ জন এমপি ব্রিটিশ সরকারকে অবিলম্বে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির কাছে একটি খোলা চিঠিতে এই আহ্বান জানান।
চিঠিতে এমপিরা উল্লেখ করেন, সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গাজার রাফাহ শহর থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছেন, যা তারা মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং জাতিগত নিধনের স্পষ্ট উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেন। তারা বলেন, “গাজায় যা ঘটছে, তাকে আর কূটনৈতিক শব্দে ঢেকে রাখা যাবে না। এটি একটি জাতিগত নিধন।”
চিঠিটি তৈরি করেছে প্রভাবশালী সংগঠন ‘লেবার ফ্রেন্ডস অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য মিডল ইস্ট’। এতে স্বাক্ষর করেছেন গ্রুপটির সহসভাপতি সারা ওয়েন ও অ্যান্ড্রু পেইকস, লিয়াম বায়ার্ন, ট্যানমাঞ্জিত সিং ধেসি, স্টেলা ক্রিসি, ডায়ান অ্যাবট, ডন বাটলার, ক্লাইভ লুইসসহ আরও অনেকে।
চিঠিতে পাঁচটি মূল দাবি উত্থাপন করা হয়েছে:
১. জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-তে যুক্তরাজ্যের অর্থায়ন অব্যাহত রাখা।
২. হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
৩. পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া।
৪. ফিলিস্তিনকে অবিলম্বে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।
৫. দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে চাপ সৃষ্টি।
এমপিরা বলেন, এখন যদি যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি না দেয়, তবে তা এই বার্তা দেবে যে ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র পাওয়ার আশা শেষ হয়ে গেছে এবং ইসরায়েলি দখলদারিত্বই স্থায়ী হতে যাচ্ছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে, তবে তারা তা তখনই করবে, যখন তা সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রভাব ফেলবে।
এর আগে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও একই আহ্বান জানান। লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য দাবি তোলা এবং ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এটিই শান্তির একমাত্র পথ।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী এমপিরা এবারই প্রথম নিজেদের নাম প্রকাশ্যে আনলেন। এর আগে ফিলিস্তিনপন্থী একটি চিঠিতে তারা স্বাক্ষর করলেও তখন তাদের নাম গোপন রাখা হয়েছিল।
No comments