Header Ads

ভারত তৈরি করছে অগ্নি-৫ বাঙ্কার বাস্টার

           

ভারত তৈরি করছে অগ্নি-৫ বাঙ্কার বাস্টার



ভারত নিজস্ব প্রযুক্তিতে অগ্নি-৫ ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইলের দুটি নতুন সংস্করণ তৈরি শুরু করেছে, যেগুলো বাঙ্কার বাস্টার হিসেবে কাজ করবে। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) এই সংস্করণগুলো তৈরি করছে।

নতুন সংস্করণের অগ্নি-৫ মাটি থেকে ৮০ থেকে ১০০ মিটার গভীরে গিয়ে কংক্রিটের স্তর ভেদ করে আঘাত হানতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে। এটি একসঙ্গে সাড়ে সাত হাজার কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম হবে।

দুটি ভিন্ন সংস্করণ থাকবে:

  • প্রথমটি আড়াই হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে টার্গেটে আঘাত হানতে পারবে এবং এটি সুপারসনিক গতিতে চলবে। এটি মূলত অপারমাণবিক বাঙ্কার বাস্টার হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

  • দ্বিতীয়টি পাঁচ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাতে সক্ষম।

২০২৪ সালের ২২ জুন, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর’ (MOP) বোমা ব্যবহারের ঘটনার পর ভারত এই প্রযুক্তির দিকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে। আধুনিক যুদ্ধের কৌশল এবং বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারত অগ্নি-৫-এর বাঙ্কার বাস্টার সংস্করণ তৈরি করছে, যা দেশটির কৌশলগত সক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেবে।

এই উদ্যোগকে যুক্তরাষ্ট্রের GBU-57 বাঙ্কার বাস্টার বোমার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। মার্কিন ওই বোমাটি ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবহারের পর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের নতুন বাঙ্কার বাস্টারকেও তেমনই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বাঙ্কার বাস্টার একটি বিশেষ ধরনের অস্ত্র, যা মাটির গভীরে ঢুকে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। এটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয় সামরিক বাঙ্কার, গোপন অস্ত্রভাণ্ডার, মিসাইল ঘাঁটি এবং কমান্ড সেন্টার ধ্বংস করার জন্য। সাধারণ বোমা যেখানে মাটির ওপর গিয়ে বিস্ফোরিত হয়, সেখানে বাঙ্কার বাস্টার মাটির ভেতরে প্রবেশ করে কংক্রিট ভেদ করে বিস্ফোরণ ঘটায়।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য বলেন, "এই অস্ত্র একটি শক্তিশালী প্রতিরোধক (deterrent) হিসেবে কাজ করবে। কোনো দেশের শক্তি প্রদর্শনের জন্য এ ধরনের অস্ত্র থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। এটি ভারতের সামরিক বাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।"

তিনি আরও বলেন, "এই ক্ষেপণাস্ত্র একাধিক স্তরে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। প্রথম বিস্ফোরণ হয় উপরের দিকে, এরপর এটি ভেতরে ঢুকে টার্গেটে বারবার আঘাত হানে। একটি নির্দিষ্ট কোণে আঘাত করলে এটি সবচেয়ে বেশি ধ্বংসাত্মক হয়। সেই কারণে কোণ নির্ধারণ খুব গুরুত্বপূর্ণ।"

তার মতে, "ভারত আগেই এই অস্ত্র তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এখন শুধু মার্কিন হামলার পর এ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনা শুরু হয়েছে।"

আধুনিক যুদ্ধে বাঙ্কার বাস্টার ক্ষেপণাস্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অনেক দেশের কন্ট্রোল সেন্টার, অস্ত্র, জ্বালানি, এবং রাসায়নিক কিংবা জৈবিক অস্ত্রভাণ্ডার মাটির নিচে সংরক্ষিত থাকে। এসব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে হলে বাঙ্কার বাস্টার ক্ষেপণাস্ত্র অপরিহার্য হয়ে ওঠে।

এই কারণে অগ্নি-৫-এর বাঙ্কার বাস্টার সংস্করণ ভারতের কৌশলগত শক্তি বাড়াতে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.