গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে জড়িত ১৪ জন আটক
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান। তিনি জানান, গতকালের সংঘাতের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং এ পর্যন্ত থানায় মোট ১৪ জন আটক রয়েছে। বুধবার রাত ৩টার দিকে যৌথ বাহিনী তাদের থানায় হস্তান্তর করে।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে, যা বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সকালে সরেজমিনে শহরে থমথমে পরিস্থিতি দেখা গেছে। সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে এবং খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কারফিউয়ের কারণে স্থানীয়ভাবে বাস চলাচলও বন্ধ আছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বার্তায় জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাত ও অস্থিরতা বিবেচনায় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কারফিউ চলাকালীন সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত থাকবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকবে ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
এর আগে, সমাবেশ শেষে ফেরার পথে এনসিপি নেতাদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে গোপালগঞ্জ পৌরপার্ক এলাকায়। দুই দিক থেকে ইটপাটকেল ও হামলা চালানো হয়। এতে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হলে জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। এবার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ায় কারফিউ জারি করা হয়।
বুধবার দুপুরে চৌরঙ্গী মোড়ে এনসিপি নেতাদের গাড়িবহরে ইটপাটকেল ছোড়া ও হামলা চালায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ এবং নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর থেকে এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ চলতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
হামলার মুখে এনসিপির শীর্ষ নেতারা আশ্রয় নেন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় তাদের সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এদিকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ শুরু হয়েছে। ছাত্র-জনতা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে মানিকগঞ্জে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক এবং সিলেটের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধের খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গোপালগঞ্জের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
No comments