Header Ads

দেশের শীর্ষ ১০ ব্যাংক ও ২ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

                       

দেশের শীর্ষ ১০ ব্যাংক ও ২ আর্থিক প্রতিষ্ঠান


  


দেশের ১০টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান টেকসই আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে তাদের পরিবেশবান্ধব এবং সামাজিক দায়িত্বশীল ব্যাংকিং কার্যক্রম বিবেচনায় রেখে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত ২০২৪ সালের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স রিপোর্টে এসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

চলতি বছরের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংক গত বছরও টেকসই ব্যাংক হিসেবে তালিকায় ছিল।

অন্যদিকে, গত বছরের তালিকায় থাকা এক্সিম ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ও উত্তরা ব্যাংক এবার এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স টানা দ্বিতীয় বছর তাদের টেকসই অর্থনৈতিক অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গবেষণা সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের রিসার্চ ফেলো ও অর্থনীতিবিদ এম হেলাল আহমেদ জনি বলেন, সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স রিপোর্ট শুধু একটি র‌্যাঙ্কিং নয়, এটি একটি বার্তা যে ব্যাংকিং খাতকে আর শুধু মুনাফার ভিত্তিতে নয়, সামাজিক ও পরিবেশগত দায়িত্বের দৃষ্টিকোণ থেকেও মূল্যায়ন করা হচ্ছে। যেসব ব্যাংক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, মূলধন সংরক্ষণ এবং গ্রামীণ-অবহেলিত জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সফল হচ্ছে, তারা এই সূচকে এগিয়ে থাকবে। এটি ভবিষ্যতের ব্যাংকিংয়ের দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।

তিনি আরও বলেন, সাসটেইনেবিলিটি সূচকে ধারাবাহিক ভালো অবস্থান মানে প্রতিষ্ঠানটির ভিত মজবুত, দায়বদ্ধতা স্পষ্ট এবং জনভিত্তিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত। তাই এই সূচকে এগিয়ে থাকা ব্যাংকগুলোর প্রতি গ্রাহকদের আস্থা বাড়বে, পাশাপাশি এটি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পাঁচটি সূচকের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়: সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ইনডেক্স, করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর), সবুজ প্রকল্পে অর্থায়ন, কোর ব্যাংকিং সাসটেইনেবিলিটি ইনডেক্স এবং ব্যাংকিং সার্ভিস কাভারেজ। এর মধ্যে কোর ব্যাংকিং সাসটেইনেবিলিটি এবং ব্যাংকিং সার্ভিসেস কাভারেজ সূচক দুটি মিলিয়ে মোট স্কোরের প্রায় ৬০ শতাংশ ওজন বহন করে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ভালো, পর্যাপ্ত মূলধন এবং কম নিট খেলাপি ঋণের হার সম্পন্ন ব্যাংকগুলো বেশি স্কোর পায়। কোর ব্যাংকিং সূচকে টায়ার-১ মূলধন অনুপাত, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের অনুপাত, প্রভিশন মেইনটেন্যান্স, সিএমএসএমই ঋণের অংশীদারিত্ব এবং বড় ঋণ পোর্টফোলিওর এক্সপোজার বিবেচনায় নেওয়া হয়।

অন্যদিকে, ব্যাংকিং সার্ভিসেস কাভারেজ সূচকে শাখা নেটওয়ার্ক, গ্রাহকের আমানত ও ঋণের হিসাব সংখ্যা, এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের পরিমাণ ইত্যাদি মূল্যায়নের আওতায় থাকে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এই রেটিং ব্যবস্থা চালু করেছে, যার মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রমে পরিবেশ, সামাজিক ও প্রশাসনিক (ইএসজি) বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নেয়ার জন্য উৎসাহিত হচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে টেকসই ও দায়বদ্ধ ব্যাংকিং সংস্কৃতি গড়ে উঠছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

No comments

Powered by Blogger.