জিএম কাদেরের সিদ্ধান্ত আইনবহির্ভূত
জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জিএম কাদেরের সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ দাবি করে বলেছেন, “আমরা জাতীয় পার্টিতেই আছি, স্বপদেই বহাল আছি, এবং পার্টি ছাড়ার কোনো প্রশ্নই নেই।”
৮ জুলাই (মঙ্গলবার) দুপুরে গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি ও দলের অন্য দুই নেতা—কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং মজিবুল হক চুন্নু—আগের দিনই দল থেকে অব্যাহতির মুখে পড়েন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদ অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদসহ আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল বলেন, “২৮ জুন অনুষ্ঠিত তথাকথিত প্রেসিডিয়াম সভাটি ছিল কোরামবিহীন এবং তা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আহ্বান করা হয়নি। সে সভার নামে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা পুরোপুরি বেআইনি ও অবৈধ।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কেউ পার্টির বিরুদ্ধে কাজ করিনি। বরং আমরা চাই পার্টি ঐক্যবদ্ধ থাকুক। এখনো সময় আছে, আসুন সবাই মিলে কাউন্সিল করি। পার্টির ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত হোক সবার অংশগ্রহণে।”
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিল আহ্বান করার পরে কোনো ধরনের বহিষ্কার, অব্যাহতি কিংবা বড় সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না—এ কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, “ধরুন আমি নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাই। তখন যদি চেয়ারম্যান আমাকে বহিষ্কার করে দেন, তাহলে তো কোনো নির্বাচনই আর হয় না। তাই এই সিদ্ধান্ত বেআইনি।”
তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা পার্টিকে ভাঙতে দেব না। আমরা কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারণে বিশ্বাসী। কাউন্সিলই পার্টির সর্বোচ্চ ফোরাম। কাউন্সিলেই হবে সব প্রশ্নের সমাধান।”
এর আগে সোমবার (৭ জুলাই) জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এক ঘোষণায় আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং মজিবুল হক চুন্নুকে দলের সব পদ ও প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেন।
দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৮ জুন অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়াম সভায় ওই তিন নেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পার্টির চেয়ারম্যান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের অব্যাহতি দেন।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পরদিনই সাংবাদিকদের সামনে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হাজির হন অব্যাহতিপ্রাপ্ত তিন নেতা এবং রওশন এরশাদ অংশের কিছু সিনিয়র নেতা। তাদের মূল বার্তা ছিল—পার্টি ভাঙন নয়, ঐক্য এবং গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নেতৃত্ব চায় তারা।
No comments