মগবাজারের হোটেলে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু: যা জানা গেছে
রাজধানীর মগবাজারে একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে একই পরিবারের তিন সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মনির হোসেন, তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার এবং তাদের প্রতিবন্ধী ছেলে আরাফাত হোসেন নাঈম।
জানা গেছে, অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার জন্য মনির ও স্বপ্না ঢাকায় আসেন। শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে তারা ঢাকার মগবাজার এলাকার ‘সুইট স্লিপ’ নামের একটি হোটেলে উঠেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি, যিনি মনির হোসেনের ঢাকার বাসার দেখভাল করতেন।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, রফিকুল ইসলাম নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে হোটেলের কক্ষ ভাড়া নেন। সন্ধ্যার দিকে রফিকুল একটি খাবারের ব্যাগ নিয়ে হোটেলে আসেন এবং পরে চলে যান। রাত ৮টার দিকে মনির হোসেন একবার নিচে নামেন এবং পানি নিয়ে উপরে ফেরত যান।
রাতের খাবার খাওয়ার পর তিনজনই অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে তারা এক আত্মীয়কে জানান। পরদিন রোববার দুপুরে রফিকুল তার মেয়েকে নিয়ে হোটেলে এসে প্রথমে স্বপ্না আক্তারকে, পরে মনির হোসেনকে এবং শেষে প্রতিবন্ধী ছেলে নাঈমকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে আদ দ্বীন হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানান, তাদের হাসপাতালে আনার আগেই তিনজনই মারা গেছেন।
হোটেলের সহকারী ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ওই পরিবার অসুস্থ হলেও হোটেল কর্তৃপক্ষকে কিছু জানাননি। পরে রফিকুলের মেয়ের চিৎকার শুনে হোটেলের কর্মীরা কক্ষে ঢুকে ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খাবারে বিষক্রিয়ার কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং ভিসেরা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া রফিকুল ইসলামকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, “তারা বাইরে থেকে আনা খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। একজন আত্মীয়কে জানানো হয়েছিল, খাবার খাওয়ার পর তাদের বমি বমি লাগছিল।”
ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট কাজ করছে।
No comments