উত্তেজনার চরমে ইসরায়েল-ইরান

 

 ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলার পর সীমান্তে ব্যাপক সেনা সমাবেশ করছে ইসরায়েল। সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখে ধারণা করা হচ্ছে, দখলদার ইসরায়েল একটি সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমনই ইঙ্গিত মিলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান ইয়াল জামিরের বক্তব্যে।

সেনা মোতায়েন ও হুঁশিয়ারি বার্তা

আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক টেলিভিশন ভাষণে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির জানান, হাজার হাজার সৈন্যকে সীমান্তে জড়ো করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “সীমান্তের প্রতিটি অংশে সেনাবাহিনী প্রস্তুত হচ্ছে।” একই সঙ্গে হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, “যে কেউ আমাদের চ্যালেঞ্জ করতে আসবে, তাকে চরম মূল্য দিতে হবে।”

জামির আরও বলেন, “ইসরায়েলের জনগণকে আমি নিরঙ্কুশ বিজয়ের আশ্বাস দিতে পারি না। ইরানি সরকার আমাদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করবে। এবার আমাদের প্রতিক্রিয়া আগের চেয়ে ভিন্ন ও আরও ভয়াবহ হবে। আমরা যেসব অস্ত্র আগে ব্যবহার করিনি, এবার তা প্রয়োগ করা হবে।”

তিনি জানান, “এই অভিযানের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেনাবাহিনীর প্রতিটি শাখা ও বিভাগ সম্মিলিতভাবে বাস্তব ও তাৎক্ষণিক হুমকির বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিচ্ছে।”

তেহরানে ভয়াবহ হামলা, নিহত শীর্ষ বিজ্ঞানী ও সামরিক কমান্ডার

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৩ জুন) ভোর ৩টার দিকে ইরানের রাজধানী তেহরানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মেহেদি তেহরানচি ও ফেরেদুন আব্বাসি নিহত হন বলে জানায় ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ এজেন্সি।

এছাড়া ইসরায়েলের ওই হামলায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (IRGC) শীর্ষ কমান্ডার ইন চিফ জেনারেল হোসেইন সালামিও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।

ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও স্থানীয় সাংবাদিকদের বরাতে জানা গেছে, তেহরানে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সদর দপ্তরও ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়া ও আগুনের দৃশ্যও দেখা গেছে।

‘নেশন অব লায়ন্স’ অভিযান

টাইমস অব ইসরায়েলের বরাতে জানা গেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী “নেশন অব লায়ন্স” নামক একটি বিশেষ বিমান অভিযানের মাধ্যমে এই হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, ইরান থেকে আসা তাৎক্ষণিক হুমকির প্রতিক্রিয়ায় তারা এই সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে।

এই অভিযানের মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। শুধু পারমাণবিক স্থাপনাই নয়, ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের অন্যান্য শহরের আবাসিক এলাকাতেও আক্রমণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।