বিএনপির এমপি মনোনয়ন পেতে লাগবে তিনটি অপরিহার্য যোগ্যতা
আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে—এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিএনপি জোরালো প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে দলটি প্রার্থী বাছাইয়ের কাজে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং একাধিক জরিপও শেষ করেছে।
বিএনপির মনোনয়ন পেতে যেসব যোগ্যতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
ত্যাগ ও সংগ্রাম: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
-
সততা ও সুনাম: যাঁরা ব্যক্তিজীবনে সৎ এবং স্থানীয় জনগণের কাছে সুপরিচিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি।
-
জনপ্রিয়তা: নির্বাচনী এলাকায় যাঁরা জনপ্রিয় এবং ভোটের রাজনীতিতে ভালো অবস্থানে আছেন।
বিএনপি সূত্র জানায়, এবার নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হবে। তরুণ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও অভিজ্ঞদেরও উপেক্ষা করা হবে না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারের একাধিক সদস্য নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলেও ইঙ্গিত মিলেছে। এছাড়া আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা মিত্র দলগুলোকেও কিছু আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি আরও জোরদার হয়েছে। দলটির জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন। ইতোমধ্যে অনেক প্রার্থী মাঠে নেমে গণসংযোগ শুরু করেছেন, তবে হাইকমান্ড একাধিক দফায় জরিপ চালিয়ে যাচ্ছেন।
তফশিল ঘোষণার পর দলের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমা নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ড চূড়ান্ত প্রার্থী নির্ধারণ করবে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনুষ্ঠিত ২০১৪ এবং ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বর্জন করেছিল। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ‘রাতের ভোট’ অভিযোগ এনে পরবর্তীতে নির্বাচন থেকে সরে আসে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এবং মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ জানান, এবার ত্যাগী, সৎ এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যাঁদের বিরুদ্ধে অপকর্মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে বা জনপ্রিয়তা কম, তাঁদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আগের মতো এক আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র দেওয়ার বিষয়টি এবার থাকবে না।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দল এবার একক প্রার্থী চূড়ান্ত করার নীতিতে অটল থাকবে।
মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, “দলের প্রতি কে কতটা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, কে নিঃস্বার্থভাবে দলের পাশে ছিলেন এবং দুঃসময়ে কে দলের সঙ্গে ছিলেন—এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তারেক রহমান ইতোমধ্যে কিছু জরিপ করেছেন এবং আরও করবেন। যোগ্যদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে।”
বিএনপির একাধিক স্থায়ী কমিটির সদস্য জানিয়েছেন, এবারের প্রার্থী তালিকায় থাকবে অনেক চমক। এমন কিছু প্রার্থীর নাম উঠে আসতে পারে, যাঁরা সাধারণ ধারণার বাইরে। আবার অনেকে যাঁরা সিনিয়র ও পরিচিত, তাঁরাও মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ত্যাগী, সৎ ও জনপ্রিয় প্রার্থীদেরই চূড়ান্ত করবেন।
কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “বিএনপি সবসময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক, ত্যাগ ও আনুগত্যের ভিত্তিতে।
No comments