গোটা জাতি আজ লন্ডনের দিকে তাকিয়ে
অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য গঠনের প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আলোচিত অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন বৈঠককে ঘিরে দেশজুড়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, "গোটা জাতি আজ লন্ডনের দিকে তাকিয়ে।"
আজ বুধবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রিজভী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, এটি একটি ঐতিহাসিক বৈঠক হবে। এ বৈঠকের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে একটি সুবাতাস বইবে।”
জানা গেছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সফরে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন এবং আগামী শুক্রবার লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে তাঁর বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি বিএনপি এবং সরকারি সূত্র থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, বিএনপি ইতিমধ্যে ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে। জাতি আশা করছে, একটি সুষ্ঠু ও সময়োপযোগী নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। তিনি বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনসহ সব জাতীয় সমস্যার সমাধান সম্ভব।”
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সমালোচনায় রিজভী বলেন, “প্রতিবেশী দেশটি বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার পতনের সম্ভাবনায় তারা হিংস্র আচরণ করছে।” তিনি অভিযোগ করেন, বিদেশি পরিচয়ে মানুষকে বাংলাদেশে পুশইন করা হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় এমন কর্মকাণ্ড বেড়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বাংলাদেশ কি বর্জ্য ফেলার জায়গা?”
তিনি আরও বলেন, “ভারত যদি বাংলাদেশে বিদেশি পরিচয়ে মানুষ পুশইন করতে চায়, তবে জনগণ শুধু প্রতিবাদই নয়, প্রতিরোধও গড়ে তুলবে। ভারতকে মনে রাখতে হবে, অতীতেও অত্যাচার-নিপীড়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি।”
করোনার নতুন প্রাদুর্ভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রিজভী। তিনি জানান, ভারতে ইতোমধ্যে ৭ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশেও সংক্রমণ শুরু হয়েছে এবং একজন মৃত্যুবরণ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভূমিকাকে এখন পর্যন্ত তেমন উল্লেখযোগ্য মনে হচ্ছে না।”
রিজভী ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “ডেঙ্গুও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। তাই সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন এবং সতর্ক হতে হবে।”
ঈদযাত্রা ও দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “ঈদের সময় বেপরোয়া যান চলাচলের কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর পাশাপাশি ঈদের সময় সমাজবিরোধীদের তৎপরতাও বেড়েছে।” তিনি মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও তৎপর হলে এসব দুর্ঘটনা ও অপরাধ রোধ করা যেত।
এই মতবিনিময়কালে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা বিষয় নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।
No comments