মক্কা ও মদিনায় আকাশপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে যেসব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সাম্প্রতিক হামলার পর পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মক্কা ও মদিনায় ব্যবহৃত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা সামনে এসেছে।
সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএর বরাতে ইসলামিক ইনফরমেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরব মূলত মার্কিন তৈরি প্যাট্রিয়ট (Patriot) এবং থাড (THAAD) আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে। মক্কা ও মদিনাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন রয়েছে।
২০১৫ সালে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করলে সৌদি সরকার রেয়থিয়নের তৈরি প্যাট্রিয়ট সিস্টেম মোতায়েন করে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হজ মৌসুমসহ সারা বছরই সক্রিয় রাখা হয়। এটি শুধু মক্কা-মদিনাই নয়, রিয়াদ ও অন্যান্য কৌশলগত অঞ্চলকেও আকাশপথের হুমকি থেকে রক্ষা করে।
প্যাট্রিয়ট ব্যবস্থায় উন্নত রাডার এবং ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এটি একসঙ্গে একাধিক লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম। বর্তমানে সৌদি আরব PAC-2 GEM-T ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে, যা বিমান ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম। পাশাপাশি, PAC-3 ক্ষেপণাস্ত্র ৪০ কিলোমিটার উচ্চতায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে খুবই নির্ভুলভাবে প্রতিহত করতে পারে।
২০১৬ সালে মক্কার কাছাকাছি হুতিদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্যাট্রিয়ট ব্যবস্থার মাধ্যমে সফলভাবে আটকানো হয়েছিল, যা এর কার্যকারিতা প্রমাণ করে।
প্যাট্রিয়টের পাশাপাশি সৌদি আরব THAAD (Terminal High Altitude Area Defense) সিস্টেমও মোতায়েন করছে, যার লক্ষ্য দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করা। এটি স্বল্প, মাঝারি এবং মধ্য-দূরত্বের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় প্যাট্রিয়টের তুলনায় আরও বেশি উচ্চতায় এবং দূরত্বে কাজ করতে পারে। যদিও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত মক্কা ও মদিনায় থাড সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হয়নি।
প্যাট্রিয়টের রাডার একসঙ্গে প্রায় ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ১০০টি লক্ষ্যবস্তু ট্র্যাক করতে সক্ষম। এটি একাধিক হুমকির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে এবং হুমকির ধরন পরিবর্তন হলে দ্রুত পুনঃস্থাপন সম্ভব।
সার্বিকভাবে, সৌদি আরবের এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মক্কা ও মদিনাকে নিরাপদ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
No comments