ইরানের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে কারা?

   

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার পর। এই পরিস্থিতিতে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে ইরানপন্থী মিলিশিয়াদের সশস্ত্র তৎপরতার আভাস পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে ইরাকের আইন আল আসাদ ঘাঁটি এবং সিরিয়ার কিছু মার্কিন অবস্থান এসব হামলার সম্ভাব্য লক্ষ্য হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস কিংবা ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সূত্র জানায়, ইরাক সরকার হামলা প্রতিরোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং আপাতত এসব মিলিশিয়াদের নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলীয় আনবার প্রদেশে অবস্থিত আইন আল আসাদ ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি। এখান থেকেই ইরাকি বাহিনী ও ন্যাটোর বিভিন্ন অভিযানে সহায়তা দেয় মার্কিন সেনারা। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর এই ঘাঁটিতে ব্যাপক মিসাইল হামলা চালায় ইরান।

এছাড়া, ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের ইরবিল বিমানঘাঁটিতেও যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে। এটি গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, প্রশিক্ষণ এবং সরবরাহ সহায়তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে:

• হাশদ আশ-শাবি (পিএমএফ), যার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কতাইব হিজবুল্লাহ, আসাইব আহল আল-হক এবং বদর অর্গানাইজেশন—যারা যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী হামলায় সক্রিয়।

• লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইরানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র, যারা দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আসছে।

• ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা, যারা সৌদি আরব ও ইসরায়েলের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

• সিরিয়ায় রয়েছে ইরানপন্থী ফাতেমিয়ুন (আফগান যোদ্ধা) ও জাইনাবিয়ুন (পাকিস্তানি শিয়া) ব্রিগেড, যারা আসাদ সরকারের পক্ষে যুদ্ধ করে।

এই গোষ্ঠীগুলোর সমন্বয়, অর্থ ও অস্ত্রের সহায়তা করে থাকে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের বৈদেশিক শাখা কুদস ফোর্স। এই সংস্থা গোটা অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।