দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক, ওপেক ফান্ডসহ বিভিন্ন সংস্থার ঋণের মোট প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলার যুক্ত হওয়ায় এই মাইলফলক অতিক্রম করেছে রিজার্ভ। প্রায় ২৪ মাস পর পুনরায় ৩১ বিলিয়নের ঘরে ফিরল দেশের রিজার্ভ।
রোববার (২৯ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ ছাড় হওয়ায় রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালের জুনে রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
তবে আইএমএফ-এর হিসাব পদ্ধতি ‘বিপিএম ৬’ অনুসারে বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালের জুনে ছিল ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ বর্তমানে ২০ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, সরকারের পতনের পর প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো বাড়িয়েছেন, যা বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর ফলে রিজার্ভের ওপর চাপ অনেকটাই কমেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, গত ১০ মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে না।
এছাড়া, দেশীয় ব্যাংক ও রাজস্ব খাত সংস্কার, বাজেট সহায়তা এবং ঋণ হিসেবে এখন পর্যন্ত ৫০০ কোটিরও বেশি ডলার দেশের রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে। সূত্র জানায়, দেশের ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা বিবেচনায় আইএমএফ আরও ৯০ কোটি ডলার ঋণ দিতে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (AIIB), জাপান ও ওপেক ফান্ড থেকে আরও ১.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চলতি মাসের মধ্যেই যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব অর্থ যুক্ত হলে মাস শেষে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসী আয় ছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চলতি সময় পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার বেশি। রপ্তানি আয়েও ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আমদানি খরচ ৫ শতাংশ বেড়েছে ঠিকই, তবে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
২০২৪ সালের ৩১ জুলাই, আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। এখন রিজার্ভ পরিস্থিতির এই উন্নয়নকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থনীতি বিশ্লেষকরা ইতিবাচকভাবে দেখছেন।
No comments