Header Ads

সরকার পতনের আগেই আত্মীয়দের দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা

    

সরকার পতনের আগেই আত্মীয়দের দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা




২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, সরকার পতনের ঠিক আগমুহূর্তে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনদের একটি বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তার এক আত্মীয়, যিনি বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন, সম্প্রতি বিষয়টি তার ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ওই আত্মীয় শেখ হাসিনার দাদা শেখ লুৎফুর রহমানের পরিবারের একজন সদস্য এবং সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রভাবশালী দায়িত্বে ছিলেন। সূত্র বলছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট সন্ধ্যার পর কারফিউ চলাকালে তিনি মোবাইল ফোনে একটি বার্তা পান। এরপরপরই তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশ ত্যাগ করেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় নেন।

ওই বার্তায় শেখ হাসিনা স্পষ্টভাবে লিখেছিলেন: “No one stay here”। এই সংক্ষিপ্ত বার্তার অর্থ খুব পরিষ্কার ছিল—দেশ ত্যাগ করতে হবে। তিনি এই বার্তা শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের উদ্দেশে পাঠিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের অন্য কোনো নেতা বা মন্ত্রীর কাছে এমন নির্দেশনা যাননি।

পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে বিদেশে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারত চলে যান। এরপর শেখ রেহানা লন্ডন চলে যান।

বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। হত্যাকাণ্ড, গুম, দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় অনেক সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। দলের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতাও গ্রেপ্তার হয়েছেন।

তবে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের অনেকেই আগেভাগেই দেশ ত্যাগ করে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারত।

এখন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেবল একজনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি হলেন সেরনিয়াবাত মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ—শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর পুত্র। তাকে ২০২৪ সালের অক্টোবরে গ্রেপ্তার করা হয়।

অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত ঐ আত্মীয় জানান, শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট বিকেলে বুঝতে পারেন, তার সরকার আর টিকবে না। তিনি পরিবারের সিনিয়র সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় বলেন, "পরিস্থিতি অনুকূলে নেই। সুরক্ষার জন্য সবাইকে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।” এরপর দ্রুত সবাইকে বার্তা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়, সরকার পতনের আগেই শেখ হাসিনা তার ঘনিষ্ঠদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন, এবং সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে অনেকেই কারাবরণ থেকে রক্ষা পেয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.