দাবি আদায়ে সরকারকে পুরোনো পথে না চলার আহ্বান
তথ্য আপা প্রকল্পের কর্মীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পুরোনো অভ্যাস পরিহারের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ও রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্টরা।
সোমবার (১৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তথ্য আপা কর্মীদের চলমান অবস্থান কর্মসূচির ২০তম দিনে সংহতি জানিয়ে এই আহ্বান জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থনৈতিক সমন্বয়ক দিদারুল ভূইয়া।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের দিদারুল ভূইয়া বলেন, আগের সরকারের কিছু প্রকল্প দুর্নীতির মাঝেও কিছুটা সফলতা পেয়েছে, যার অন্যতম উদাহরণ তথ্য আপা প্রকল্প। এটি দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি তথ্যসেবা পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অথচ বর্তমানে এই প্রকল্পটি বন্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে। এখন পর্যন্ত সরকার কোনো নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। এই প্রকল্প বন্ধ হলে কর্মসংস্থান ধ্বংস হবে। আমরা এই সরকার থেকে সংস্কার আশা করি, ধ্বংস নয়।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, তথ্য আপা কর্মীরা দিনের পর দিন অবস্থান করলেও সরকার তাদের কথা শুনছে না। যদি হাজার হাজার নারী সড়কে নেমে প্রতিবাদ করে, তবে হয়তো সরকারের টনক নড়বে। সরকারের অবহেলাই রাজপথে আন্দোলনের কারণ। দুর্ঘটনা ঘটার পর সবাই আফসোস করবে, অথচ এখনই সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাই গতানুগতিক রাজনৈতিক আচরণ ত্যাগ করে বাস্তবতা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে তিনি আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টাকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানান এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা সরকারকে কঠোরভাবে সমালোচনা করতে চাই না, তবে এমন আচরণ আমাদের অতীতের নানা বিষয় মনে করিয়ে দেয়। অতীত সরকারগুলো, বিশেষ করে শেখ হাসিনার আমলে, সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়ার প্রতি তেমন কর্ণপাত করত না। যেহেতু এই সরকার একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এসেছে, তাদের উচিত মানুষের কথা শোনা। সব দাবি হয়তো পূরণ করা যাবে না, কিন্তু অন্তত আলোচনা করতে হবে।
তিনি সরকারকে অনুরোধ করেন, আজ অথবা আগামীকাল তথ্য আপা কর্মীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টাকে দ্রুত সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানান তিনি।
তৃতীয় পর্যায়ে তথ্য আপা প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনার বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, নতুন নিয়োগের মধ্যে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয় জড়িত থাকতে পারে। যেহেতু প্রকল্পের নতুন ধাপ শুরু করা হচ্ছে, এর মানে প্রকল্পটি কার্যকর ও সফল। তাহলে বর্তমান কর্মীদের রেখে প্রকল্পটি আরও সম্প্রসারণ করাই উচিত।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মে থেকে তথ্য আপা প্রকল্পের কর্মীরা দুই দফা দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এমনকি ঈদের সময়েও তারা কর্মসূচি চালিয়ে গেছেন। তাদের দাবিগুলো হলো—প্রকল্প শেষে তাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা এবং বিগত বছরগুলোতে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের অজুহাতে কর্তন করা বেতনভাতা ফেরত দেওয়া।
No comments